Posts

Showing posts from April, 2020

সাগরপারের ডায়েরি পর্ব-৯ | Sagarparer Diary (Episode-9)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৯ আজকের প্রসঙ্গ : ডঃ গুহ'র চেম্বার ও নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাইওয়ে'র দু'দিকে সাজানো সৌন্দর্য, পার্থবাবুর সান্নিধ্য আর পথের ধারে জলপান - এই ত্রয়ীর সংস্পর্শে বাকি পথে মৌনব্রত নেওয়া আমাকে নিয়ে এল নিউ জার্সি শহরে ডঃ গুহ'র চেম্বার-এ। Dr. Guha Cardiac Thoracic Surgeon, complicated case handle করেন, সুতরাং Edison, New Jersy-তে তিনি একজন অতি পরিচিত, স্বনামধন্য ডাক্তার - যাঁর পসার এবং নাম-ডাকের ব্যাপ্তি তাঁকে 'বিখ্যাত' আখ্যা দিতে পারে।  এহেন ডঃ গুহ'র ডাক এবার আমাদের দিকে। তাঁর উচ্চগ্রামের আহবান, 'এই যে Mr Basu, আমরা এইদিকে, আমার চেম্বার-এ চলে আসুন'। চেম্বারটি মূল দরজা দিয়ে ঢুকে ৭/৮টি কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ডানদিকে - Elevated Wooden Floor। তাঁর চেম্বার-এই আমরা সকলে প্রথমে জমায়েত হলাম। চেম্বার মানে New Brunswick শহরে প্রায় ১০/১২ কাঠা জমির ওপর দু'তলা ছবির মত বাড়ি। বাড়ির সামনে পার্কিং লট'-এই প্রায় খান দশেক গাড়ি রাখা যায়। এই বাড়িতেই ডঃ গুহ'র প্র্যাক্টিস ও minor surgery।  নিউ জার্সি স্টেটের সবথেকে ভালবাসার একটা

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৮) | Sagarparer Diary (Episode-8)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৮ আজকের প্রসঙ্গ : নিউ জার্সি'র পথে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের গাড়ি নিউ ইয়র্ক এয়ারপোর্ট ছেড়ে এগিয়ে চলল সামনের দিকে। এই গাড়িতে চালকের আসনে যে ভদ্রলোক তার নাম পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। প্রায় ১৭-১৮ বছর ধরে আমেরিকার বাসিন্দা।  বিকেল গড়িয়েছে, তবু সূর্যের আলোর জোর কমে নি। পশ্চিমের দেশ তো ? ...... যেতে হবে নিউ জার্সি। নিউ ইয়র্ক থেকে নিউ জার্সি - ১ ঘন্টার কিছু বেশি সময়ের পথ। দু'টো আলাদা রাজ্য বা স্টেট - দু'টোর নাম শুরু 'নিউ' কথাটা দিয়ে। সে নাম সার্থকও বটে - পুরোনো বা মলিনতা এ দুই শহরকে ছুঁয়েছে বলে মনে হয় না। নিউ জার্সি'র কথায় পরে আসছি। JFK Airport থেকে হাইওয়েতে পড়া গেল - ৮ লেনের রাস্তা - কিছুদূর অন্তর অন্তর পথ-নির্দেশিকা। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার - প্রতিটি নির্দেশিকাই আস্ত, মনে হল গতকাল যেন লাগান হয়েছে।  প্রায় মিনিট ২৫ চলার পর পার্থবাবু বললেন,'চলুন, একটু কফি খাওয়া যাক। হাইওয়ে'র ধারে Dunkin' Donuts-এর একটা দোকান বা কফিবার। বেশ কিছু স্নাক্স ও কফি নেওয়া হল - বুঝলাম পার্থবাবু খেতে ও খাওয়াতে ভালবাসেন। বাঙালির প্রথম পরিচয় এখানে

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৭) | Sagarparer Diary (Episode-7)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৭ আজকের প্রসঙ্গ : নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   টানা ১৯ ঘন্টার উড়ানের পরেও কোনরকম ক্লান্তি বোধ করলাম না। এবার জানলা দিয়ে নিউ ইয়র্ক শহরটা চোখে পড়ছে, এখানে সময় দুপুর ৩টে। আটলান্টিকের পারে টানা একটা রাস্তা, রাস্তার অপর প্রান্তে ব্যাক-ওয়াটার ঢুকে একটা খাঁড়ির মতো তৈরী করেছে। দেখতে পেলাম নিউ ইয়র্ক শহরের উত্তুঙ্গ অট্টালিকাগুলো - হয়তো ১০০ তলার নিচে কোনটাই নয়। ছোট ছোট মডেলের মতো রকমারি রঙে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মহাসাগরের পারে। এই জাগাটাকেই বলে 'ম্যানহাটান'। আমি ছবিতেই বহুবার দেখেছি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, বিখ্যাত টুইন টাওয়ার, পাশে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি - একটা প্যানোরামিক দৃশ্যপটে ধরা পড়ছে সব কিছু। এবার এসব চাক্ষুষ করার অপেক্ষায় সশরীরে। অতলান্তিক পার করে এবার প্লেন নামবে। আমার স্ত্রী স্বপ্না বলছিল,"বাবা রে ! এতো ঘন্টা ধরে একটা মহাসাগর পার হওয়া - কি excited লাগে, তাই না ! John F Kennedy Airport - পৃথিবীর ব্যস্ততম। প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্লেন এখানে ওঠানামা করে। Airport-এ আমেরিকান সাহেবদের security Checking একটু বেশিমাত্রায় বজ্র-আঁটুনি। Immigrati

বড়ো বিস্ময় জাগে (পর্ব-৬) | Baro Bismay Jaage (Episode-6)

Image
বড়ো বিস্ময় জাগে  পর্ব-৬ শান্তিনিকেতন থেকে, শেষবারের মত  ....... বয়স বাড়ে জীবনের, স্বাভাবিক নিয়মে - তখন জীবন-মরণের সীমানায় দাঁড়িয়ে দু'পাশের দু'প্রান্তরই মনের ক্যানভাসে ধরা পড়ে - কি ফেলে এসেছি আর কোথায় যাব - 'জুড়াইতে চাই, কোথায় জুড়াই' । এমন মুহূর্তে পৌঁছেও, যে মানুষ বোধের চূড়ায় বিরাজ করেন, তিনি সাধারণের ভাষায় হয়তো অতিমানব। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও কবি'র বাহ্যজ্ঞান ছিল তেমনই বিস্ময়কর। তাই জীবনের সাদা-কালোর সন্ধিক্ষণে পৌঁছেও, হাতের লেখায় কাঁপন ধরলেও, মুখে মুখে ছড়া/কবিতা বলতেন - হয়তো নিজেকেই ভোলানোর জন্যে। বয়স তখন ৭৯ - সাল ১৯৪০। কবি কি শুনতে পাচ্ছিলেন তাঁর আহ্বান ? "জীবন-মরণের সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার" ..... অনেক বন্ধুর দেখা পেয়েছেন, 'বন্ধুর' কৃত্রিম-অকৃত্রিম ভালোবাসাতেও খামতি ঘটে নি। 'বন্ধুর' পথ অতিক্রম করেছেন নিজের সর্বশক্তি দিয়ে - নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে - আসলে তা আমাদেরই বাঁচিয়ে রাখতে। কিন্তু কতদিন ? শরীর যে আর প্রশ্রয় দিতে চায় না।  চিকিৎসকের বারণ সত্ত্বেও চললেন কালিম্পঙ - কবির অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। মন চাইলেও শর

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৬) | Sagarparer Diary (Episode-6)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৬ আজকের প্রসঙ্গ : ফ্লাইটের অভিজ্ঞতা  এর মধ্যে আরেক পর্ব ব্রেকফাস্ট জুটেছে। কি জানি! আমেরিকায় বুঝি সকাল হল। আমার তো একই দিনে দু'বার ব্রেকফাস্ট হয়ে গেল। হ্যাঁ ঠিকই - নিউ ইয়র্ক-এর সময় এখন ভোর ৪টে১৫মি:। প্লেন এখন ইস্তানবুলের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে চলেছে। সে দেশের কিছু বিখ্যাত সৌধের ছবি ভেসে উঠছে সামনে লাগানো স্ক্রিনে। আমি লিখে চলেছি - বেশ নেশায় পেয়েছে। কোন ফোন নেই - মাথাটাও ফাঁকা-ফাঁকা - হাজারো চিন্তাও দেখি ছুটি নিয়েছে। আকাশপথে খানা-খন্দ নেই, এই বাঁচোয়া. একটু লেখা যাচ্ছে। এয়ার-পকেট অবশ্য আছে - তাতে পড়লে স্থিতি লয় হতে পারে। তবে এ তো নতুন কিছু নয় ! সারাদিনে সারা পৃথিবীতে কত শত লোক কত রকমের পকেটে পড়ছে, পকেটে পুরছে, সময় কি আর দাঁড়িয়ে আছে ? সুতরাং কুছ পরোয়া নেই ! মনের কথা এবার সদায়-কালোয়, আঁকি-বুঁকিতে।  একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হাতে ঘড়িটার সময় বদল করিনি, কলকাতায় সন্ধে নেমেছে। একটা পুরো দিন কেটে গেল - আকাশে আকাশে। সারাদিন ধরে নিয়মিত ব্যবধানে খাওয়া-দাওয়া আর সামনে টিভি স্ক্রিনে প্লেনের গতিপথ দেখতে দেখতে।আজকের প্লেন সম্পূর্ণ ভর্তি। বিপ্লবদা বলছিলেন, এই সময় প্রচু

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৫) | Sagarparer Diary (Episode-5)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৫ আজকের প্রসঙ্গ : নিউ ইয়র্কগামী ফ্লাইট  দেখতে দেখতে 'দোহা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট'। US Immigration -এ সিকিউরিটি চেক-এর নামে প্রায় সবকিছুই পরীক্ষা করা হল। হোমরা-চোমরা সিকিউরিটি অফিসারদের হাতে বিদেশের মাটিতে নিজেকে সঁপে দেওয়া। বেল্ট, ওয়ালেট, জুতো, ল্যাপটপ, চামড়ার ব্যাগে পাসপোর্ট - সব এক শয্যায় কালো বাক্সের মধ্যে পরীক্ষা দেবার লাইনে। বিপ্লবদা একটু শৌখিন মানুষ। চামড়ার নানাবিধ সামগ্রীতে বেচারির সারা শরীর বাঁধা পড়েছে। সমস্ত কিছু খুলে আবার করে পরে নেওয়া 😞............. 'announcement শোনা গেল'------- তিনজন passenger এখনো ওঠেনি।  Qatar Airlines দাঁড়িয়ে আছে নিউ ইয়র্ক  ওড়বার   অপেক্ষায়। মোহনদা wheelchair-এ থাকবার দরুন সিকিউরিটির সবুজ সংকেতে অনেক আগেই পুত্রসমেত নির্দিষ্ট আসনে। আমি, শুভাশিস, বিপ্লবদা প্লেনে উঠলাম। ক্যামেরাটা বের করেছিলাম স্মৃতি ধরে রাখবো বলে, কিন্তু চরম অগোছালো শরীর নিয়ে তাকে আর সময় দেওয়া গেল না।  প্লেন ছাড়লো ভারতীয় সময় ১১টা ১০মিনিটে (সকাল)। কাতার-এর টাইম সকল ৮টা ৪০মি:। এখান থেকে ঘন্টা দশেক লাগবার কথা।  দেখতে হবে আমেরিকায়

বড়ো বিস্ময় জাগে (পর্ব-৫) | Baro Bismay Jaage (Episode-5)

Image
বড়ো বিস্ময় জাগে ........ পর্ব-৫ | প্রসঙ্গ : "তুমি রবে নীরবে"  আগের দুটি পর্বে 'তুমি রবে নীরবে' গানটি নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছি। মজা লাগে ভাবতে,  বেহাগ রাগ মূলত ঠাট বিলাবলের অঙ্গ। পুরনো মতে সেখানে তীব্র মধ্যম লাগত না। অথচ এখন এর সঙ্গে বক্রগতির তীব্র মধ্যম প্রায় অচ্ছেদ্য। তাই অনেক সঙ্গীতজ্ঞের মতে, এই রাগকে কল্যাণ ঠাটের অন্তর্ভুক্ত করা যায়।  কিন্তু এ তো গেল এখনকার কথা। আশ্চর্যের এই যে, রবিঠাকুর এই 'মধ্যম' কে নিয়েই কি দুর্দান্ত এক্সপেরিমেন্ট করলেন এবং কোন কালে ! 'রগম' বক্রগতিতে মধ্যম-এ ন্যস্ত করে এমন এক অদ্ভুত সুন্দর রূপ প্রকাশ করলেন যে এই গান চিরস্মরণীয় হয়ে উঠল।  ছোটবেলা থেকেই আমার গানের বাণীর প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ ছিল। আজকে নিয়মিত গান গাইবার প্রয়োজন বা অভ্যাস না থাকলেও বহু গানের কথা বা lyric আজও আমার স্মৃতি থেকে মুছে যায় নি। অনুধাবন করবার চেষ্টা করতাম, দুই অন্তরায় কাব্যিক তফাৎ।  গুরু শ্রী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করলাম,'সাধারণত গানে দুই অন্তরাতেই একই সুর লক্ষ্য করা যায়। এই গানে স্বরলিপি পড়ে দেখলাম সামান্য একটু আলাদা।' দ

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৪) | Sagarparer Diary (Episode-4)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৪ আজকের প্রসঙ্গ : Qatar Airlines বেশ চাপা একটা উত্তেজনা অনুভব করছি। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব টেলিফোনে উৎসাহ-আবদার - দুটোই জানাচ্ছে। চাকরিসূত্রে কিছুদিন দুর্গাপুরে কাটানোর সুবাদে সেখানে অনেক লড়াই করে তৈরী করেছি 'রাগরঞ্জনী সংগীত একাডেমি'র দুর্গাপুর শাখা। তাদের আগ্রহে অসীম আন্তরিকতার ছাপ। কলকাতায় রাগরঞ্জনীর মূল শাখা - সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা দেখা করতে আসছে - ভালোবাসার মোড়কে তাদের নানা উপদেশ - সব মিলিয়ে ব্যাপারটা বেশ জমে উঠেছে। আরো জমে গেলাম ঠান্ডায় !  উরিব্বাবা ! 'কি ঠান্ডা' রে ভাই প্লেনের ভিতর ! ফ্রিজে বসে আছি মনে হচ্ছে। মরুভূমির দেশের এয়ারলাইন্স বলে কিনা কে জানে !! লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে কম্বল চাইলাম। হাসিমুখে নাকচ্যাপ্টা থাই এয়ার-হোস্টেস কম্বল দিয়ে গেল। জুতো-মোজা পরে লাল কম্বল গায়ে একথা-সেকথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি। বাইরে প্রগাঢ় অন্ধকার - খাবার দিতে এসেছে, ডাকছে। ঘড়িতে দেখলাম ভোর ৫টা বেজে ১০মিনিট। এখন ব্রেকফাস্ট ? না বললাম। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে আবার ঘুম। এবার জাগরণের বাস্তবে ফেরা সকাল সাড়ে ৬টায়। সামনের স্ক্রিনে দেখছি

বড়ো বিস্ময় জাগে পর্ব-৪ | Baro Bismay Jaage (Episode-4)

Image
বড়ো বিস্ময় জাগে ........ পর্ব-৪ প্রসঙ্গ : 'তুমি রবে নীরবে' আগের পর্বে বেশ কয়েকটি আঙ্গিক থেকে গানটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কিছু তথ্য, কিছু বিশ্লেষণ - এই নিয়ে গানটির শৈল্পিক চিত্রকল্প বিস্ময়কর। আজকের পর্বে আমার রবীন্দ্রসংগীত-গুরুর কাছে বসে শেখার অভিজ্ঞতা এবং প্রবীণ বয়েসের আঙিনায় পা ফেলা একজন রবীন্দ্র-অনুরাগীর চোখে ধরা পড়া এই গানের অন্য রূপ বর্ণনা করবার চেষ্টা করবো।   আমার সংগীতগুরু শ্রী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় একদিন এই গানটি আমাদের শেখাচ্ছিলেন। 'হৃদয়ে মম' সুরটির আন্দোলন কিভাবে হওয়া উচিত সেইটি গেয়ে দেখাতে গিয়ে বললেন, 'রবে নীরবে' আর 'হৃদয়ে মম' - দুটি ক্ষেত্রেই সুরবিন্যাস হয়েছে ১১ মাত্রায়। অথচ ২য় ক্ষেত্রে মনে হয় যেন অনেক বেশি সময় ধরে সুর প্রলম্বিত হচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে কণ্ঠের ব্যবহার ও ওজন তফাৎ না করলে একটা monotony তৈরী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এইটাই তোমরা যখন গাইবে, স্বরলিপি ভালো করে পড়বে। তাহলে এই সুরের বৈচিত্র্য তোমাদের নজরে আসবে। আমাদের প্রতি রবিবারের গানের ক্লাস নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হত এবং একে একে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা বিদায় নিত। তখন দাদা থাকতেন শ্যামপ

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৩) | Sagarparer Diary (Episode-3)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-৩ কাগজপত্র ও জামাকাপড় গুছোতে একটু দেরিই হয়ে গেল। আসলে পাসপোর্ট / ভিসা হাতে পেলাম ৩ তারিখ বিকেল ৪টের সময়। আমাদের টিকিট ৩ তারিখ মধ্যরাত্রে বা বলা ভালো ৪ তারিখ ভোরে। Flight 'Qatar Airlines' - Official Departure 4th August 2011 - 4.40 am । আমেরিকা বলে কথা, তাও প্রথমবার, maiden visit. সুতরাং একটু বেশি ব্যবহৃত কোন জামাকাপড় বেচারারাই ঠাঁই পেল না সাগরপারের সুটকেসে। কাজ সংক্রান্ত বইপত্র আর প্রয়োজনীয় অল্প কিছু জামাকাপড় সঙ্গে করে দমদম এয়ারপোর্টে পৌঁছলাম রাত সাড়ে বারোটায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এসে পৌঁছলেন আমার বাকি সহযাত্রীরা। প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও বিশ্বভারতী কলাভবনের অধ্যাপক শ্রী মোহন সিং খাঙ্গুরা, রবীন্দ্রসংগীতে তবলাবাদক হিসেবে এক ও অদ্বিতীয় শ্রী বিপ্লব মন্ডল, রবীন্দ্রভারতীর শিক্ষক ও ভরতনাট্যম শিল্পী শ্রী সুভাশিষ ভট্টাচার্য ও এস্রাজ বাদক শ্রী আবির সিং  খাঙ্গুরা - সম্পর্কে মোহনদার কনিষ্ঠ পুত্র আর আমি - এই পাঁচমাথা এক হলাম। প্রসঙ্গত বলে রাখি, এই বিপ্লবদাই কিন্তু আমার নাম সুপারিশ করেছিলেন আমেরিকার ওই সংস্থার কাছে এবং ভিডিওর সাহায্যে আমার কিছু কাজের নমুন

উদ্ধার | Uddhar

Image
উদ্ধার  ।   ( কবিতা) ( শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই সকলকে। এই নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়ের প্রাক্কালে আসুন আমরা সবাই মিলে নতুন করে একটা সুন্দর সুস্থ পৃথিবী গড়ে তোলবার অঙ্গীকার করি। সাবধানে  থাকি, নিজেকে ও নিজের পরিবারকে পরিচ্ছন্ন রাখি। দোকানে-বাজারে নিজেরাই গড়ে তুলি নির্দিষ্ট queue। আমার 'আমিত্ব' বিসর্জন দিই এই চৈত্র অবসানের সাথে সাথে। কোন ক্ষেত্রেই নিজের প্রভাব খাটিয়ে আইন ভাঙব না। তাহলে হয়তো আঞ্চলিক প্রশাসন ও পুলিশ অনেক সহজভাবে সাধারণ আর অসাধারণের প্রকৃত সংজ্ঞা বুঝবে। নীরবে দাঁড়াব  মানুষের পাশে, প্রয়োজনে - ক্যামেরা ছাড়াই। আজ অন্তত এটুকু বোঝবার সময় এসেছে পুরোনো আর নতুনের আসলে কোনো বিভাজন নেই। তাই বেঁচে আছি, তার বিজ্ঞাপনের প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন সকালে উঠে সূর্যপ্রণাম আমাদের বেঁচে থাকার জন্মদিন, আর  রাতের ঘুম শান্তির, আরামের - এ যেন মানসিক বা শারীরিক  মৃত্যুর না হয়। যেহেতু জন্ম বা মৃত্যু -  এ দুটোতেই আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই,  ঘুম কাল ভাঙবে কিনা আজ আমাদের জানা নেই - তাই  আমাদের চেতনার ঘুম ভাঙুক।)  করুণা চাই CORONA ! করুণা !! আভাস ইঙ্গিত না দিয়ে আর  এ ভাবে প্রাণে

সাগরপারের ডায়েরি-পর্ব ২ | Sagarparer Diary (Episode-2)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-২ এই আমার প্রথম আমেরিকা যাত্রা। প্লেনে বসে খুব মনে পড়ছে ছোটবেলার একটা ঘটনা - আমার বয়স তখন আট। গানের প্রতি অদম্য আগ্রহ দেখে আমার মা ভর্তি করে দিয়েছিলেন পাড়ার গানের স্কুলে। কিন্তু আসলে মা ছিল আমার প্রথম সঙ্গীত-গুরু। মায়ের নিরলস পরিশ্রমের মাঝে আমি যখন গান নিয়ে বসতাম, তখন লক্ষ্য করতাম সমস্ত কাজ ফেলে মা আমার পাশে। প্রসঙ্গতঃ, মা খুব ভাল গান গাইতে পারত।  কিন্তু নানা কারণে সেই গুণ বাস্তবে কাজে লাগে নি। মায়ের সাহচর্য আর বাবার নির্বাক স্নেহময় প্রশ্রয়ে আমি গান-পাগল হয়ে উঠতে থাকলাম। বেশ বুঝতাম, পৃথিবীর অন্যান্য যে কোন বিষয় থেকে গানই আমাকে সবথেকে বেশি আনন্দ দেয়। ৮ বছরের সেই 'আমি'টার চোখে এঁকে দেওয়া স্বপ্ন আজ আরেক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি।  সুপর্ণাদির সঙ্গে বড় জোর আরো বার দুয়েক ফোনালাপ, তারপর নিউজার্সির Indian Institute of Performing Arts-এর সরকারি আমন্ত্রণ - এটুকুতে সত্যিই ভাবিনি এতো অল্প আলোচনাতেই একটা সম্পূর্ণ সান্ধ্য-অনুষ্ঠানের আয়োজন পূর্ণতা পেতে পারে। তাও এত কম সময়ে, মার্কিন কন্স্যুলেট-এর বিস্তর বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে। ২রা আগস্ট ২০১১তে যখন আমেরিকান ভদ্রলোক বল

বড়ো বিস্ময় জাগে (পর্ব-৩) | Baro Bismay Jaage (Episode-3)

Image
বড়ো বিস্ময় জাগে ........ পর্ব-৩ গান একাকী গায়কের নয়। গীতিকার-সুরকার-গায়ক, এই তিন জনকে যদি আমরা আলাদা সত্ত্বায় দেখি তাহলে হয়তো প্রত্যেকের কাছেই তার নিজস্ব অনুভব খুঁজে পাব।  কিন্তু সেই অনুভবের স্বরলিপি শুধু খাতার পাতায় এঁকে দেওয়া যায় না। তবু আমি চেষ্টা করবো নিছক তথ্যের বাইরে গিয়ে একজন সংগীত-পিপাসুর অন্তর্দৃষ্টিকে তুলে ধরতে - এই পর্বে। যেহেতু এখানে গীতিকার ও সুরকার একই ব্যক্তি এবং তাঁর কণ্ঠে এই গান আমাদের শ্রুত নয়, সুতরাং গায়কের আবেদন তার নিজের ওজস্বীতার মাপকাঠিতে তোলা থাক।   " তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম " এই গানে বারেবারে একটি শব্দ গজলের আঙ্গিকে ফিরে ফিরে আসে - 'নিশীথিনীসম' । এ  গান আমাকে-আপনাকে টেনে নিয়ে যায় নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমা রাতে - একা। যাবতীয় সুখ-দুঃখ-বেদনা নিয়ে যেখানে প্রিয়তমা  রয়েছে  'নিশীথিনীসম'; অনুরাগের আপন ও একাত্ম সঙ্গী হয়ে।  রবীন্দ্রনাথ কোন এক সময় গভীর আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় মন্তব্য করেছিলেন, 'সকলের নয় যে আঘাত, ধোরো না সবার চোখে'। প্রেম যখন অনির্বচনীয় সৌন্দর্যে প্রতিভাত, কি প্রয়োজন তার বিলাসী বহিঃপ্রকাশে ? এইখানেই উত্তীর্ণ হয় গায়কের প্র