Posts

Showing posts from May, 2020

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-২২) | Sagarparer Diary (Episode-22)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-২২ আজকের প্রসঙ্গ : মূল অনুষ্ঠানের ইতিবৃত্ত  'যাত্রী আমি'র ১ম পর্ব শেষ করলাম কবিকণ্ঠে 'তবু মনে রেখো দিয়ে'। কবির স্বকণ্ঠের সেই গানের রেশের সঙ্গে খুব হালকা করে মোহরদির গাওয়া সর্বজনবন্দিত 'তবু মনে রেখো' এসে মিশে গেল - ঠিক যেমন করে স্রোতস্বিনীর ভিন্ন ভিন্ন ধারা এসে মেশে নদীর মোহনায়, সমুদ্রের অববাহিকায়। মঞ্চের আবহ অনুজ্জ্বল হতে থাকল - শুরু হলো সমবেত গান 'ওরে পথিক, ওরে প্রেমিক'। রবার্ট বার্ন্স্, স্কটিশ কবি কবিগুরুর সংগীত-চেতনা নিয়ে আমরা প্রায়শই চর্চা করি। বিশ্বজোড়া  খ্যাতনামা  সংগীতকার - রবার্ট বার্ন্স্, শুবার্ট, হ্যুগো উলফ - এঁদের নাম আমরা জানি - এঁরা বহু বিশ্বখ্যাত গানের রচয়িতা। প্রসঙ্গতঃ বলে রাখি, বিশ্বজুড়ে রবার্ট বার্ন্সকে নিয়ে যে Celebration চলে, তার আপেক্ষিক  মূল্য  বা  যাকে  আমরা সহায়ক  বাণিজ্য বলি,  স্কটল্যান্ড সরকারি হিসেবে তা প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড প্রতি বছরে। অর্থাৎ, শুধু বার্ন্সকে নিয়ে প্রচার, তাঁর জন্যে মিউজিয়াম ইত্যাদি পরোক্ষভাবে সে দেশের সরকারকে এই প্রভূত অর্থ-বাণিজ্যে আয় করতে সহায়তা করে। রবার্ট বার্নসের বি

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-২১) | Sagarparer Diary (Episode-21)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-২১ আজকের প্রসঙ্গ : মূল অনুষ্ঠানের ইতিবৃত্ত  মূল অনুষ্ঠান বেশ জমে উঠেছে, শ্রোতারাও আপ্লুত সুরের রসে। পঙ্কজ কুমার মল্লিক ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পরে যে নামটি সর্বাগ্রে উচ্চারণ করা উচিত -তা হল দেবব্রত বিশ্বাস।  একটা অপূর্ব সুরেলা অথচ 'ব্যারিটোন ভয়েস' গেয়ে চলেছে - 'মেঘ বলেছে যাব যাব, রাত বলেছে যাই'। আমরা যেন শুনতে পাচ্ছি মেঘের আওয়াজ। যে আওয়াজ 'আট থেকে আশি' - সকলকে বিশ্বাসের সঙ্গে বলছে - "রবীন্দ্রনাথের গান ! এ তো আমার নির্জন একাকীর - আমি গাইতে বড্ডো ভালোবাসি"। দেবব্রত 'জর্জ' বিশ্বাস কিন্তু না ! তিনি ভালোবাসলেই তো চলবে না ! গান শুনে ছেলে-বুড়ো মোহিত হলেই বা কি আসে যায় ? রবীন্দ্রসংগীতে এই Emotion, এই Expression - কেউ দিতে পারল না ! আর তিনি এসে একাই সব দিয়ে দিলেই যে খাতায়-কলমে  গোঁড়া  তদানীন্তন   রবীন্দ্র-রক্ষকদের তা  মেনে নিতে হবে, এমন তো কোথাও লেখা নেই ! সুতরাং শ্রোতৃমহলে জর্জদার অপরিসীম জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও বিদগ্ধজন তাঁকে প্রকাশ্যে গ্রহণ করলেন না। বড়ো অভিমান নিয়ে চলে গেলেন জর্জদা - ১৯৮০ সালে। আশ্চর্য ! সেই শ

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-২০) | Sagarparer Diary (Episode-20)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-২০ আজকের প্রসঙ্গ : মূল অনুষ্ঠান এবার আমাদের অনুষ্ঠানের কথা।  নির্দিষ্ট সময়ে  শুরু হলো এই সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক পথচলা । নানাভাবে পালিত হবে রবীন্দ্রজন্মের সার্ধশতবর্ষ। স্বাধীনতার উত্তরযুগে তাঁর গান কেমন করে বাঙালির নিত্যপূজা হয়ে উঠল, গানে-গল্পে তারই  পর্যালোচনা। 'সাগরপারের ডায়েরি'র পূর্ববর্তী পর্বে আমি জানিয়েছিলাম এই অনুষ্ঠানের মূল ভাবনা ঠিক কি ছিল।  আজ একটু হলেও ছোট্ট করে সেই অনুষ্ঠানের বিবরণ দেবার চেষ্টা করব - আর জানাব  কবিগুরুর অপার নির্মাণকৌশলকে পাথেয় করে IIPAর অপরিসীম পরিশ্রম, সুপর্ণাদির ভাবনা ও সাংগঠনিক প্রয়াস, আমার লেখা, সঞ্চালনা ও বহু গুণীজনের অতি-উৎকৃষ্ট সাঙ্গীতিক পরিবেশনা কেমন করে উপস্থিত শ্রোতাদের আবিষ্ট করেছিল  ।  কলা-প্রদর্শণের সময়ে শিল্পী ও শ্রোতাদের মস্তিস্ক-নিঃসৃত সূক্ষ্ণ নৈর্ব্যক্তিক আদান-প্রদান ঠিক লিখে বোঝানো সম্ভব নয়। তবু কখনও যদি সাদা-কালোর জগতে সেই আনন্দযজ্ঞের হোমকুন্ড জ্বলে, তার আচারে পবিত্র হতে বাধা কোথায় ?  ....."প্রাণ আপনি চায় চলিতে; সেই তাহার ধর্ম। এইজন্য নানা আয়োজনের-প্রয়োজনের খেলার ছুতোয় সে কেবল চলে। .......যাত

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৯) | Sagarparer Diary (Episode-19)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৯ আজকের প্রসঙ্গ : অনুষ্ঠান ও আনুষঙ্গিক  আজ আমাদের অনুষ্ঠান - সন্ধে ৬টা থেকে। বিকেল ৪টের মধ্যে পৌঁছনোর কথা অডিটোরিয়ামে। মাথার মধ্যে অনুষ্ঠানের যাবতীয় ভাবনা-চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। স্ক্রিপ্টটা নিয়ে বসলাম।  পাশে শুভাশিষ নিশ্চিন্তে ঘুমের জগতে।  শুভাশিষ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করে দীর্ঘদিন। নিজের বিষয় নৃত্যকলা। ভরতনাট্যম, ওডিসি, মনিপুরী নৃত্যে পারদর্শী ৫৫ বছরের এক তরতাজা যুবক। প্রত্যেক সকালে প্রাণায়াম করা, কিছু যোগাভ্যাস আর অল্প অনুশীলন না হলে শুভাশিষ তৃপ্ত হয় না। আমেরিকাতেও এর অন্যথা দেখিনি। গভীর নিষ্ঠা শুভাশীষকে এতো দীর্ঘকাল স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত রেখেছে - ভাবলে বন্ধুবরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে পারি না। অপেরার মত দেখতে মঞ্চটা অনেকটা এইরকম ছিল যথাসময়ে পৌঁছলাম প্রেক্ষাগৃহে। অপেরার মতো দেখতে মঞ্চের স্থাপত্য। নিউ জার্সিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বেশ কিছু আর্ট সেন্টার - যেমন আমাদের কলকাতায় প্রত্যেক মিউনিসিপ্যালিটির একটি করে নিজস্ব মঞ্চ আছে, এখানেও তেমন দেখলাম। আর্ট সেন্টারগুলোর স্থাপত্যনির্মাণ  একেকটার  এক এক রকম - তাই  মঞ্চের গড়নও স্বতন্ত্র। এই

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৮) | Sagarparer Diary (Episode-18)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৮ আজকের প্রসঙ্গ : ডঃ গুহ'র বাড়ি ও রিহার্সাল  ১৯২১ - বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তা রবীন্দ্রনাথ  প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হতোদ্যম,  মনোবলহীন  জার্মানরা যখন বেঁচে থাকার নতুন দিশা খুঁজছেন, সে সময় তাঁরা এমন একজনকে 'পরিত্রাতা' হিসেবে পাশে চাইছিলেন, যাঁর উপস্থিতি তাদের হৃত আত্ম-সম্মানকে পুনরুদ্ধারে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করবে। জার্মানিতে পা রাখলেন রবীন্দ্রনাথ - প্রথমবার - ১৯২১ এ। জার্মানির সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর কবিতা ছিল মানবসত্ত্বার অন্তর্নিহিত সত্য ও আত্ম-চেতনার উপলব্ধি, রোমান্টিক সম্পর্কের গভীর অনুভব ও বৈষ্ণবশাস্ত্রের অহিংস, বিশুদ্ধ নীতি। তার প্রতি জার্মানজাতির গভীর অনুরাগ থাকবে এমন আশা করাটা হয়তো সমকালীন বা সময়োপযোগী ছিল না। আর তাছাড়া ১৯১৩র নোবেলপ্রাপক রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর গীতাঞ্জলির কবিতার অন্তর্নিহিত অনুভূতি পাশ্চাত্যের কানে তখনও নতুন। তবু বিশ্বকবির বক্তৃতা শুনতে জার্মানির প্রতিটি প্রেক্ষাগৃহ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ - ইতিহাসই বলে দিয়ে গেছে সে কথা। আমরা রোমাঞ্চিত হই, দ্বিধা-দ্বন্দ্বের  দ্বৈরথে সহচর না হয়ে সারথির হাতে সংস্কৃতির ধ্বজা উড়তে দেখে

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৭) | Sagarparer Diary (Episode-17)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৭ আজকের প্রসঙ্গ : ডঃ গুহ'র বাড়ি  'আমি সদা অচল থাকি,  গভীর চলা গোপন রাখি আমার চলা যায় না বলা' - গায়ক ও শ্রোতার মেলবন্ধনে রবীন্দ্রনাথের গান বা রবীন্দ্রসংগীত কখনো থেমে থাকেনি। স্ক্রিপ্টটা প্রায় দাঁড়িয়ে গেছে। শুনছি দেশ-বিদেশের অনেক রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞ আসছেন এই অনুষ্ঠান শুনতে। কাজেই চাপা উত্তেজনার সঙ্গে একটু ভয় ভয়ও করতে লাগল।সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের ভাবনা, বিন্যাস, সঞ্চালনা - এ সবই যে আমারি হাতে ! 'এ মণিহার আমায় সাজবে তো' ? চেম্বার-এর মত ডঃ গুহ'র বাড়িও মনোমুগ্ধকর। চারিদিকে রুচিবোধের পর্যাপ্ত উপস্থিতি। আর রবীন্দ্রনাথ - Basement-এর বসার জায়গা থেকে তিনতলা পর্যন্ত বাড়ির সর্বত্র তিনি রয়েছেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে। ডঃ গুহ'র স্ত্রী সুপর্ণাদি শান্তিনিকেতনের প্রাক্তন ছাত্রী। গুরুদেবের আশ্রমিক শিক্ষার প্রতিফলন বাড়ির প্রতিটি কোণে।  একটা মাত্র অমিল - বেশ মস্ত অমিল - লক্ষ্য করলাম। সুপর্ণাদির প্রিয় প্রাণী 'পেঁচা'। হালফ্যাশনের Hobby গনেশের মত রকমারি চেহারার পেঁচা বিদ্যমান তিনতলার ড্রয়িং রুমে - ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলতে হবে যে এরা কেউই জীবন্

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৬) | Sagarparer Diary (Episode-16)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৬ আজকের প্রসঙ্গ : ছেলেবেলা ও আমার গান  আজ ৬ই আগস্ট - সকাল ৯টা বাজল। রাতে ভাল ঘুম হল না। সময়গুলো কেমন স্বপ্নের মত পার হয়ে যাচ্ছে। জেটল্যাগ বস্তুটা যে কি, তা এসে ইস্তক বুঝতে পারিনি। ব্যাঙ্কে চাকরি করি, স্বভাবতই অফিসফেরত গানবাজনাকে প্রশ্রয় দিয়ে ঘুমোতে বেশ রাত হয়। কিন্তু সে প্রথা যে সুদূর প্রবাসেও আমার পিছু ছাড়বে না, তা কেমন করে জানবো ? সকলে মিলিত হলাম প্রাতঃরাশ টেবিলে। সারাদিনের নিরিখে আমার সবচেয়ে প্রিয় আহার। নানা বাহারে আহার-পর্ব মিটতে ঘন্টাখানেক সময় পার হয়ে গেল। আমাদের অনুষ্ঠান আগামীকাল - ৭ তারিখে। আজ আরেক দফা রিহার্সাল এবং কিছু সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের সঙ্গে দেখা করা - এই হল আজকের Agenda। ডঃ গুহ ফোন করে জানালেন যে আমরা যেন ঠিক ১টায় লাঞ্চ করে তৈরী থাকি, তিনি গাড়ি পাঠাবেন। যেতে হবে একটু দূর পথ। USA-তে ৮০/১০০ মাইলের দূরত্বকে কেউ তোয়াক্কাই করে না।  পরিবেশ মনের ওপর বেশ প্রভাব ফেলেছে। ডঃ গুহ'র বাড়িতে যাওয়ার আগে কালকের অনুষ্ঠানের স্ক্রিপ্ট লিখতে বসলাম। বেশ খানিকটা কাজ আগেই সেরে রেখেছিলাম। এবার একটু গুছিয়ে নেবার পালা। অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তুও বেশ অভিনব। রবী

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৫) | Sagarparer Diary (Episode-15)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৫ আজকের প্রসঙ্গ : ডঃ গুহ'র চেম্বার    সমুদ্রপারের স্নিগ্ধ হাওয়ায় সারাদিনের ক্লান্তি অনেকটাই দূর হল। বিচ থেকে ফিরলাম ডঃ গুহ'র চেম্বারে। নিউ জার্সি শহরটা যেন ঈশ্বরের নিজের হাতের তৈরী এক সাজানো বাগান। অপূর্ব Landscape, সবুজ মখমলের গালচে বিছানো শহরটার সারা শরীরে। কেমন এক মায়াময় ভালবাসার ছোঁয়া। বড় রাস্তা থেকে ডানদিকে হঠাৎ একটা বাঁকের মুখে ডঃ গুহ'র প্রাসাদসম চেম্বার। রাস্তাটা চেম্বারকে ডানহাতে রেখে সামনের পাহাড়ি পথে এঁকেবেঁকে অদৃশ্য হয়ে গেছে।  চেম্বারের সামনে পার্কিং জোনে একটু পায়চারি করার খুব ইচ্ছে জাগলো। কফির কাপটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে এলাম নিচে। নানা সাইজের, নানা মডেলের গাড়িগুলো একটু গতি বাড়িয়েই বাড়ির পথে। চেম্বারের মত পার্কিং জোনটাও যথেষ্ট বড়। প্রায় খান দশেক গাড়ি আরামসে পার্ক করা যাবে। আসলে এখানে সরকারি নিয়মটাই এমন। পুরো আমেরিকা মহাদেশে রাজ্য এবং শহর অনুযায়ী বাড়ি বানানোর আলাদা আলাদা নির্দেশিকা আছে। সেগুলো অগ্রাহ্য করলে জরিমানার অংকে আরেকটি নতুন ফ্ল্যাট কেনা যায়। সুতরাং বলাই বাহুল্য যে নিউ জার্সি শহরের এই অংশেও একটি নির্দিষ্ট Land Measurement আছ

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৪) | Sagarparer Diary (Episode-14)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৪ আজকের প্রসঙ্গ : এলেম নতুন দেশে   নিউ জার্সি'র সমুদ্রতটের ঠিক উল্টো প্রান্তে হাওয়া ও কফি - দুটোই প্রাণ ভ'রে উপভোগ করছি। কুড়ি ছোঁয়া যে মার্কিন সুন্দরীরা রেস্তোরাঁয় আমাদের রসনাপূর্তিতে সাহায্য করছেন - তাদের দেখে 'কলেজ পড়ুয়া' বলেই মনে হল।  'এলেম নতুন দেশে' - তাই  বাঙালির আভিজাত্যের  সংকোচ গোপন করে  নিজেকে  একটু গুছিয়ে নিয়ে  একটু বাঙালি বাঙালি দেখতে গোলগাল মুখের এক বিদেশিনীকে প্রশ্নটা  করেই ফেললাম -   'আচ্ছা, আপনারা এখানে যারা আপ্যায়নে আছেন, তারা কি সকলেই College Student ?  স্মিত হেসে মেয়েটি বললো, 'আমরা সকলেই ম্যানেজমেন্ট পড়ছি। দিনে কলেজ করি, সন্ধেবেলায় অতিথিসেবা। এতে আমাদের পড়ার খরচ আর পকেট মানি - দুটোই উঠে আসে'।  তার ইংরেজি উচ্চারণে মার্কিন টান - তবু বুঝতে অসুবিধে হল না। খরিদ্দারের ভিড়ে কথা  এর বেশি  এগোল না। সেই মুহূর্তে  আমারও আর  অন্য  প্রশ্ন মনে এল না। শুধু এটুকুই ভাবলাম, এ দেশের culture আমাদের থেকে অনেকটাই আলাদা। আমাদের দেশে  পড়ুয়া   ছেলে-মেয়ে রা  হয়তো চেনামুখের সামনে নিজদেশে এমন কাজে উৎসাহ প্রকাশ করবে না। 

সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১৩) | Sagarparer Diary (Episode-13)

Image
সাগরপারের  ডায়েরি পর্ব-১৩ আজকের প্রসঙ্গ : সী-বিচের ধারে জলপানের বিরতি  সত্যি ! খিদেটা বেশ চাগাড় দিয়ে উঠেছে। এমন পরিবেশে সমুদ্রের স্নিগ্ধ হাওয়ায় হাতে "American Fast Food" না থাকলে কোন বাঙালিকে কি আর মানায়! আরেকবার পার্থবাবুর অনুভবী মনের প্রশংসা না করে পারলাম না।  খুবই আশ্চর্য হলাম "Food Parlour'-এ এসে। ঝাঁ-চকচকে দোকানগুলো লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে এক বহুতলের একতলায়। চওড়া ফুটপাথে তাদের রকমারি খাবারের বর্ধিত বিপণন। পিতলের শিকল অথবা রঙিন ফুলের টব দিয়ে সৃষ্ট বিভাজন রেখা বুঝিয়ে দিচ্ছে কোন ফুটপাথ কোন দোকানদারের দখলে। তবে অহেতুক হাত ধরে টানাটানি নেই। 'দিদি', 'ও বৌদি' এদিকে আসুন বলে আন্তরিক আহ্বানও অদৃশ্য।  'মালিক'দের  জোর করে  'মাল' গছানোর  কোন তাগিদ নেই, তাই ক্রেতাদেরও মানসিক চাপ নেই বললেই চলে। যত্ন করে নিয়ম তৈরী করা, আর আরও যত্নের সঙ্গে তাকে মেনে চলা - যতই দেখি ততই ভালো লাগে - 'আমার সকল রসের ধারা' বোধ হয় এখানেই সর্বহারা হয়ে ভারতে ফিরবে। বিতর্কের অবকাশ আছে, তবু বলব - কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ভারতবাসীদের আরো শৃঙ্খলাপরায়ণ হওয়া প্রয়োজন

শ্রীচরণেষু মা | Shreecharanesu Maa

Image
শ্রীচরণেষু মা, আজ ১০ই মে, তোমাকে এই চিঠি লিখছি জাপান থেকে। আজ তো "Mother's Day" মা - আমার প্রণাম নিও। তোমার ওপর আমার একগুচ্ছ অভিমান জমা হয়ে আছে মা ! এতগুলো মাস কি'করে একটাও কথা না বলে থাকলে তুমি ! অথচ বাবাকে বলতে, 'খোকা কেমন পা ছোঁড়ে আজকাল, জান তো ? তুমি কিন্তু এক মুহূর্তও আমাকে ছাড় নি। আজকেও তো তাই মা ! অন্ধকার থেকে এই প্রথম আলোয় এলাম - দেখলাম, তুমি আমায় চেপে ধরেছ, তোমার চোখে জল - কেন, তা বোঝবার মাথাই তো তৈরী হয় নি। ডাক্তারজেঠু বললেন, 'এই যে ম্যাডাম, আপনার থেকে খোকার নাড়িটা আলাদা করে দিলাম। সুতোটুকু শুধু , নাড়ির টান'টা নয়। সেদিনও কিছু বুঝিনি। মনে আছে, যেদিন প্রথম কথা বলতে শিখেছিলাম, আমি তোমায় ডেকেছিলাম। তুমি একছুট্টে এসে আমায় বুকে তুলে নিয়েছিলে - সেই আমার প্রথম কাকলি। তোমার চোখে সেদিনও জল ছিল, কেন বুঝিনি ! তোমার হাত ধরে 'অ আ ক খ' আর 'চার-এর নামতা' পর্যন্ত শিখেছিলাম। ভাল স্কুলে যেদিন ভর্তি হই, শুনে ফেলেছিলাম বাবার কথা, তোমার কানে, ফিসফিসিয়ে ! 'এত নামি স্কুলে আমাদের পরিবারে এই প্রথম কেউ ভর্তি হলো - কি বিশাল বিল