Posts

Showing posts from January, 2021

কবিতা । রোজের সকাল । তপন বসু

Image
কবিতা । রোজের সকাল । তপন বসু সকালকে মনে রেখে রাত যে ফুরোয় - সকালকে ভালবেসে সূর্য-উদয় ; সকালের আহ্বানে দিনে পথ চলা - কাঁপা-হাতে চায়ের কাপে                        সাবধানী ঠোঁট ফেলা।। সকালগুলো যে রোজ সকালেই আসে তবুও সে দিনেরাতে অশরীরে ভাসে ; সারাদিনে সাজে-কাজে ক্লান্তি ঘুমঘোর - 'মন' খোঁজে আশ্রয়,                     'জীবন', কালকের ভোর।। মাটিতে প্রথম স্নান, সুরের প্রভাব  পথ-চলা সুরেলা, গানের স্বভাব ; ক'দিনের এই পথিক-ভ্রমণ                        গানের কাছে আসা - 'জীবন' তুমি থাকো, না থাকো - তোমায় ছুঁয়ে থাকবে  আমার গান আর সুরেলা ভালবাসা।। - তপন বসু | 5/7/2019 ©tapanbasu. all rights reserved. photo courtesy : thelouisaugustjonasfoundation / cgtn

কবিতা । "হঠাৎ"

Image
  কবিতা । "হঠাৎ" যদি হঠাৎ হারিয়ে যাই - পারলে  মনে রেখো। চলার পথ যদি দ্বিখণ্ডিত হয় ? কোথাও আমাকে ছুঁয়ে থেকো। এ জীবন  যদি  বদল দেখে   হঠাৎ আসা দখিন হাওয়ায় - জেনো, বৈরাগী মনে  রং ধরেছে   অসুন্দরের পরম বেদনায়।  যে বাঁশি শোনায় জীবনের গান   চেনা-অচেনা সুরের জালে  পথে নামা পথিক তখন  ভুল করে ফেলে ছন্দ-তালে।  সামনের পথ কুয়াশা ঢাকা  ফেলে আসা ঘরে মায়ার বাঁধন  এগোতে গেলেও পিছনের টান   একা হওয়া এক অসাধ্য-সাধন। একক প্রয়াস পারবে কিনা  পেরিয়ে যেতে অশেষ বাধা - উত্তর আছে তোমার কাছেই  তোমার সুরেই গলা সাধা।  রবির ভাষায় 'একলা চলো' ছিঁড়ে অচলায়তনের সর্বনাশ -  আজ তোমাকে নিয়েই একলা হবো  তুমিই আমার আত্ম-প্রকাশ। © tapanbasu. All rights reserved. Photo Courtesy : stocksy/PxHere

কিছু যে আছে আমারও | কবিতা by তপন বসু

Image
    || কবিতা / কিছু যে আছে আমারও ||                              আমার কাছে অনেক আছে - ভৈরবী আর আলো আছে আঁধার রাতের স্বপ্ন আছে আপনজনের স্পর্শ আছে গীতবিতানের শব্দ আছে |           আমার কাছে আরো আছে - অন্তরে এক শক্তি আছে মহাশক্তির ক্ষমাও আছে  হিসেবী সব খাতা আছে বেহিসেবী চলা আছে |          তবু যে কেন ভয় আছে ? অনেক পাওয়ার মাঝে কোথাও          এইটুকু বোধশক্তি আছে  অবিনশ্বর আত্মাকে ঘিরে           এই 'আমি'টার অবসান আছে |                      একটা সুপ্ত ইচ্ছেও আছে | এতকিছু প্রাপ্তির জন্যে           স্বীকারোক্তির প্রয়োজন আছে ; সমাজের বুকে আরও সবুজ           ছড়িয়ে দেবার ভাবনা আছে ; কালোর মাঝে আলোর প্রভাব            প্রকাশিত হোক বাসনা আছে ; অশেষ যার লীলার খেলা          সেথা, সমর্পণের খেয়া আছে - আমিত্বকে বাইরে রেখে          'তোমাতে' বাঁচবার ইচ্ছে আছে | ইচ্ছের ভিড়ে এতকিছু -             তাই শেষ একটা ইচ্ছে আছে  আমি-তুমির এই সংসার জুড়ে             প্রতিটি হৃদয় স্পন্দিত হবে সকলে গাইবে "জয় হোক" -

কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ৫ (১০ই জানুয়ারী ২০২১) | Kanchanjanghar Diary Ep#5

Image
কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি-পর্ব ৫ (১০ই জানুয়ারী ২০২১ - রাত ১০টা) 'এবার আমার ঘরে ফেরার গান পর্যটনের সুখের ছবি - রেখায় আঁকুক বাউল কবি -  বেড়ানোর সুখ সাঙ্গ করে,  স্মৃতির পাতা বন্ধ করে ; নিজের বাসায়  ভালোবাসায়,  আপন আনন্দ-স্নান'। এবারে আর ফ্লাইট লেট্ করে নি।  তল্পিতল্পা নিয়ে  বাড়ি ঢুকলাম রাত ৮টা নাগাদ। বেড়ানোর আনন্দ আর ঘরে ফেরার আনন্দে একাকার হয়ে বেড়ানোর গল্প শুনতে অতি আগ্রহী মা'য়ের সঙ্গে বাহির-মহলের  গল্পে মশগুল হলাম। সেই গল্প করতে করতেই লিখতে বসলাম আজকের ডায়েরি - আমাদের 'কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি'র ৫ম ও অন্তিম পর্ব। জানুয়ারীর ৫-এ আমরা পৌঁছেছিলাম দার্জিলিং। সেখানে ঠিকই ছিল যদি weather ঠিক থাকে, তাহলে সকালের ব্রেকফাস্ট সেরেই ম্যালের উদ্দেশে রওনা দেব। কপাল এতো ভাল, যে তিনদিন দার্জিলিং-এ ছিলাম, বেশির ভাগ সময়টাই আকাশ ছিল পরিষ্কার। কাঞ্চনজঙ্ঘার গল্প ও ছবি তো আগেই শেয়ার করেছি। তাই আমরা পায়ে হেঁটে (যদিও ম্যাল-এ হন্টন ছাড়া গতি নেই) হোটেল থেকে ম্যালের পথ পাড়ি দিয়েছি দুটো দিনই। হাঁটাপথের বাঁহাতে ধাপে ধাপে রাস্তা নেমে তৈরী করেছে দার্জিলিং শহরের মানচিত্র, আর ডানহাতে দোকান ও হোটেলের সমন্বয়ে আলো

কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ৪ (৬ই জানুয়ারী ২০২১ - রাত ১০টা)

Image
  কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ৪ (৬ই জানুয়ারী ২০২১ - রাত ১০টা) কাল এসে পৌঁছেছি দার্জিলিং - বাংলার রূপসী কন্যার কাছে। এই North Bengal বরাবরই আমার বড্ড প্রিয়। শিলিগুড়িতে একবার পৌঁছতে পারলেই মন আশ্রয় পায় প্রকৃতির নিবিড় অন্তরঙ্গতায়।  চোখ  যেদিকে যায়,  দুই  পা যেন  সেদিকেই  এগোতে চায় - এক হবার মন্ত্রে। সেবক রোড, হিলকার্ট রোড - এই দুই মূল রাস্তা শিলিগুড়ি থেকে আপনাকে নিয়ে যাবে সেখানেই - যেখানে আপনি যেতে চান। আর হ্যাঁ, যদি নিশ্চিত না থাকেন কোথায় যাবেন - তাহলে এই উত্তরবঙ্গ সফরে আপনার মন বুঝিয়ে দেবে 'দোটানা' কাকে বলে ! 'পাহাড়' যে এতো জীবন্ত, এতো রূপবতী হতে পারে, তা এ পথে 'পা' রাখলে তবেই 'হাড়ে হাড়ে' বুঝতে পারা যাবে।  আমাদের উদ্দেশ্যই ছিল যে এবারের পর্যটন একটু অন্যরকম হোক। যেখানে লট-বহর নিয়ে শুধু চরকিপাক নয়, শীতের পাহাড়ের হাড়-কাঁপানো ঠান্ডায় জমে গিয়ে পাহাড়ী সৌন্দর্যকে জমিয়ে আস্বাদন করাটাই ছিল প্রকৃত অভিলাষ। এই ঘরবন্দি পরিবেশ বিশ্বের দরবারে তো কারোর স্বেচ্ছায় এসে উপস্থিত হয় নি ? তবু ঘরের বাইরে বেরোতে পেরেছি ভেবে যথেচ্ছাচারিতায় এই পাহাড়-পর্যটন উদযাপন করাটাও অনুচিত। যে ক

কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ৩ (৪ঠা জানুয়ারী ২০২১

Image
কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ৩ (৪ঠা জানুয়ারী ২০২১ - সন্ধে ৬টা) আজ সারাটা দিন দুরন্ত কাটল। ঘুম থেকে উঠেই তো চোখ গেল পাহাড়ের দিকে, সেখানে কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান নয়। স্বপ্না একটু বিমর্ষ হয়ে মন্তব্য করল, 'ঐটুকু সাদা মেঘের কি ক্ষমতা ! এতো বড়ো  কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ঢেকে দিল'। এও এক অপূর্ব খেলা প্রকৃতির - যদি না জানা থাকত যে,  কাঞ্চনজঙ্ঘা ওখানে দেখা যায়, তাহলে ওই নীল গালিচায় সাদা মেঘটাকেই অপরূপ মনে হতো। যত রাগ গিয়ে পড়লো ওই মেঘের উপর। যতটা না আমার জন্যে, তার চেয়ে অনেক  বেশি স্বপ্নার  ম্লান  মুখটা  দেখে।  আমাকে যখন কেউ জিজ্ঞেস করে, পাহাড় না সমুদ্র - কোনটা ভাল লাগে ? মনে যা আসে তাই উত্তর দিয়ে দিই। আসলে কোন সময় যে কাকে ভালো লাগবে, তা আমার তো জানা নেই।  এবারে যেমন প্রতিটি মুভমেন্টই ভাল লাগছে। তা যে অনেকটা কোবিদের বিষদৃষ্টিতে বন্দিদশার কারণে তা বুঝলেও, এই শীতের পাহাড়কে বড়ো আপনজন মনে হচ্ছে। চায়ের টেবিলে ঠিক হলো আমরা আজ একটা গাড়ি নিয়ে সাইট-সিইং-এ বেরুবো। কাল যা অভিজ্ঞতা, তাতে পদব্রজে বেশিদূর যাবার মোহ আর আমাদের কারোর মধ্যেই নেই। শুধুমাত্র কুটুই এতটা যোগ্য ভাবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে যে, ও এর মধ্যে তিনবার

কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ২ (৩রা জানুয়ারী ২০২১ - রাত ৯টা)

Image
  কাঞ্চনজঙ্ঘার ডায়েরি - পর্ব ২ (৩রা জানুয়ারী ২০২১ - রাত ৯টা) আজ সকালে ঘুমটা আচমকা ভাঙলো মৃদু কোলাহলের শব্দে। স্বপ্না মুখরিত হোটেল-ঘরের জানলা দিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখতে পেয়ে। ডুপ্লে টাইপের সুইটে ওপরের ঘরে  শুয়েছিলাম  আমি আর প্রণবদা । প্রণবদা দেখি জানলার পর্দা সরিয়ে বাইরের আকাশে ভাবুক চিবুকে স্থির রয়েছে। আমিও সেই দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখি ঝলমল করছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। হোটেলের এই ঘরের বারান্দার সামনে দিয়ে চোখের দৃষ্টি  সবুজ এক ভ্যালি  পার করে নিয়ে যেতে হবে সামনের পাহাড়ে। ঠিক যার মাথার ওপর দিয়ে আরো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে  কাঞ্চনজঙ্ঘা - বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। আকাশ পরিষ্কার নীল, বনরাজি সবুজে সবুজ।  ঘড়িতে দেখলাম সাড়ে সাতটা বাজে। চায়ের কাপ নিয়ে ঘরের সোফা আর বিছানায় আমরা সবাই লেপের মধ্যে পা ডুবিয়ে আয়েস করে বসলাম - কাঁচের জানলা দিয়ে চোখ খোলা আকাশপথে, যেখানে প্রায় একশো আশি ডিগ্রি জুড়ে সবুজ উপত্যকা, ব্যাকড্রপে হিমালয়ের ভুবন-ভোলানো ল্যান্ডস্কেপ।  আমাদের এই হোটেলটা ইন্টারনেট দেখে দেখে কুটু আর বুবলু  পরামর্শ করে বুক করেছে। ব্রিটিশ ভদ্রলোক Mr Cochrane এই হোটেলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আজ থেকে বহু আগে।