Posts

Showing posts from November, 2020

মনে পড়ে-৫ | সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় | Mone Pore Ep#5

Image
মনে পড়ে -৫ কিংবদন্তী অভিনেতা-নাট্যপরিচালক-কবি ও আবৃত্তিকার শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ।। কত কিছু যে মনে পড়ে, আবার অনেক কিছুই মনে পড়ে না। ঘটে যাওয়া ঘটনারা সাদা-কালো পুরোনো ছায়াছবির মতো পর্দায় আসে, দেওয়ালে সেঁটে থাকা ক্যালেন্ডারের পাতা হয়ে পড়ে থাকে স্মৃতির অন্ধকারে, তারিখ সেখানে স্পষ্ট অনুধাবন করা যায় না।  সালটা ১৯৯৫, সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ। সেদিন কলকাতার কলামন্দির মঞ্চে এক অন্য-ভাবনার গানের অনুষ্ঠান। শ্রী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গীত-জীবনের পঞ্চাশ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে, তাঁর দীর্ঘদিনের ছাত্র হিসেবে আমার একান্ত অবরুদ্ধ  এক  ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলাম একটি অভিনব সঙ্গীতানুষ্ঠানের, যেখানে দ্বিজেনদাকে কেন্দ্র করে মুম্বাই, শান্তিনিকেতন ও কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পী ও গুনীজনেরা এক-মঞ্চে একই চালচিত্রে উপস্থিত থাকবেন। দ্বিজেনদা নিজেও অত্যন্ত উৎসাহিত ছিলেন আমার অনুষ্ঠান-পরিকল্পনার বিষয়বস্তুতে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আমি নিজেও বেশ টেনশনে - আমার উত্তেজনার পারদ উর্ধমুখী হয়ে খেই হারিয়েছে। এমন অবস্থায় মহা-গোল - সম্পূর্ণ অদেখা-অকল্পনীয় মর্মস্পর্শী রাত-ভোরে পাওয়া এক দুঃসংবাদে। সঙ্গীতের রাজসভা

স্বর্ণযুগের পঞ্চপ্রদীপ - Musical webseries in Ragranjani webTV

Image
~ স্বর্ণযুগের পঞ্চপ্রদীপ ~ এই শনিবার ২১শে নভেম্বর ঠিক রাত ৯টায় শুরু হচ্ছে রাগরঞ্জনী ওয়েব টিভির নতুন ধারাবাহিক "স্বর্ণযুগের পঞ্চ-প্রদীপ"। আজ বাংলা সঙ্গীতের জগতে এক নতুন দিগন্ত দেখানো মহান সুরকার-সঙ্গীতস্রষ্টা সলিল চৌধুরীর জন্মদিবস। ১৯২৫শে যখন তাঁর আবির্ভাব হল, সেই বছরে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন 'গৃহপ্রবেশ' নাটক। আমি কেমন যেন বিহ্বল হয়ে পড়ি, যখন সময়ের সঙ্গে সুর মেলাই - তখন আর এই ঘটনাগুলোকে mere coincidence বলে মানতে ইচ্ছে করে না। আমি দেখি, বাংলার কৃষ্টি-জগতে গৃহপ্রবেশ ঘটল আরেক দিগজয়ী শিল্পীর। রবীন্দ্রনাথকে যদি তপস্বী বলে বিশ্বাস করি, তাহলে এই নাটকের গতিপ্রকৃতি নানাভাবে বিচরণ করলেও, নামকরণ হয়তো বা সলিল চৌধুরীর আগমনের ইঙ্গিত। যাক, এই কল্পনাজালে জড়িয়ে পড়লে কারোর কারোর তা অবান্তর মনে হতেও পারে। তাই মূল বক্তব্যে আসি, সলিল চৌধুরীর জন্মদিনকে মনে রেখে তাঁর সৃষ্টির প্রতি সম্মান জানিয়ে, এই শনিবার থেকে আমাদের রাগরঞ্জনী ওয়েব টিভির ফেইসবুক-এর পাতায় শুরু হবে এই নতুন অনুষ্ঠান, যেখানে সলিল চৌধুরীর অত্যন্ত কাছের মানুষ, তাঁকে গুরু হিসেবে গ্রহণ করা বাংলা গানের জগতে আরো এক নক্ষত্র সুরকার-সংগীতপরি

মনে পড়ে-৪ | সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় | Mone Pore Ep#4

Image
মনে পড়ে -৪ কিংবদন্তী অভিনেতা-নাট্যপরিচালক-কবি ও আবৃত্তিকার শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ।। সৌভাগ্যের সেই মুহূর্ত । সৌমিত্রদা'র সঙ্গে কাজের ফাঁকে আলাপচারিতার সোনালি দিন  সেদিন দুপুরে হঠাৎ দাদা'র টেলিফোন। দাদা অর্থে আমার অন্যতম সংগীতগুরু শ্রী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। সেটা ল্যান্ডলাইন টেলিফোনের যুগ। বললেন, 'কাল বিকেলে তৈরি থেকো, আমি তোমাকে বাড়ি থেকে বিকেল ৫টা নাগাদ তুলে নেব। গ্রান্ড হোটেলে একটা অনুষ্ঠান আছে'। এমনিতেই এই সুযোগ আমার কাছে আশীর্বাদ-স্বরূপ। আর তাছাড়া দাদার আবদার মানে ওটাই আদেশ এবং কোন মানসিক টালবাহানা ছাড়াই সে আদেশ শিরোধার্য। পরদিন বিকেলে চাপা আনন্দ-উত্তেজনার মিশেলে তৈরী হলাম, দাদার সাথে পৌঁছলাম গ্রান্ড হোটেলে। হোটেলের Banquet-এ অনুষ্ঠান, হৃদয়ের ডাক্তারদের আয়োজনে সে এক এলাহী ব্যবস্থা। পৌঁছে দেখি, সেখানে উপস্থিত রয়েছেন সৌমিত্রদা, সে সময়েই তারা হয়ে ওঠা সেই কিংবদন্তি অভিনেতা শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এই কিশোর তাঁর মুখোমুখি হবার প্রথম দিন, যে দিনটি থেকেই ওই এক-কুড়ি বয়সের কিশোরের তাঁকে নিয়ে মোহ ও সম্মোহনের শুরু। লাল রঙের হাতা-গোটানো ফুল শার্ট, বিস্কুট রঙের ট্রাউজার। দাদাক

সবুজদ্বীপের ডায়েরি (আন্দামান পর্ব-১২) | Sobujdweeper Diary Ep#12

Image
সবুজদ্বীপের ডায়েরি  ।  আন্দামান পর্ব-১২ সবুজদ্বীপের ডায়েরি । 29th February 2020  । রাত  ১০ টা ......... জারোয়াদের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে Lime Stone Cave দেখে স্পিড বোটে করে বারাটাং দ্বীপের মূল সীমানায় পৌঁছলাম। গাড়ি অপেক্ষাই করছিল, আমাদের নিয়ে এল খুব ছিমছাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি হোটেলে লাঞ্চ-এর জন্য। প্রায় দুপুর দু'টো বাজতে চলল। তিনটের মধ্যে আমাদের রঙ্গত জেটি পার হতে হবে - নইলে আজকের মতো ফেরা বন্ধ। এই ট্রপিকাল রেইন ফরেস্ট বা রিসার্ভ ফরেস্ট, যেটা আদতে জারোয়াদের বাসভূমি, তার দু'প্রান্তে প্রবেশের বেশ কড়াকড়ি। দিনে মাত্র চারবার এর অভ্যন্তরে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া যায় সঠিক পরিচয়পত্র অনুমোদন-সাপেক্ষে। সকাল ছ'টা, বেলা ন'টা, দুপুর বারো'টা ও বিকেল তিন'টে - এই চারবার দু'প্রান্তের মূল দরজা খোলা হয়। নিয়ম অনুযায়ী দিনে একশটির বেশি গাড়ি বা যানবাহনের ঢোকবার অনুমতি নেই এই অঞ্চলে।  আমরা সকলেরই দ্বিপ্রাহরিক আহার যথাসময়ে সাঙ্গ করে নিয়মের বেড়াজাল আরেকবারের মতো ডিঙিয়ে বাসে চড়লাম হোটেলে ফেরার উদ্দেশ্য নিয়ে। গতরাতে কারোরই প্রায় ঘুম হয়নি - বাস ছাড়তেই মোটামুটি সকলেই, মানে আমাদের বাসের চোদ

সবুজদ্বীপের ডায়েরি (আন্দামান পর্ব-১১) | Sobujdweeper Diary Ep#11

Image
সবুজদ্বীপের ডায়েরি  ।  আন্দামান পর্ব-১১ সবুজদ্বীপের ডায়েরি । 29th February 2020  । সকাল ৭ টা ......... বলছিলাম গুহা-পথের রোমাঞ্চের কথা। গাইড তো আমাদের আর এগোতে বারণ করল। আমরা পুরো দল তার কথায় মোমের পুতুল হলাম। সে দেখিয়ে দিল কিভাবে শরীরকে নানা কসরতে এই গুহার মধ্যে প্রবেশ করাতে হবে। যেমন হয় সাধারণতঃ - এই গুহারও প্রবেশপথ বেশ সরু। নানা দেহভঙ্গিমায় ভিতরে ঢুকতে হবে, যেটা আমাদের দলের প্রাচীন সদস্যদের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ইচ্ছেশক্তির জোর অনেক বেশি। ইতিমধ্যেই কয়েকজন হাত-পা ছুঁড়তে শুরু করেছেন, জমে থাকা কলিজা নিয়ে জমাট বাঁধা Limestone Cave-এ ঢুকবেন বলে।  কিছু না কিছু শারীরিক বিভঙ্গে প্রায় সকলেই প্রবেশ করতে পারলাম গুহার অভ্যন্তরে - মুখে বিজয়ীর গর্বিত আভা - যদিও তা উপলব্ধি করা গেল না সেভাবে - কারণ ভেতরটা খুব অন্ধকার। স্যাঁতস্যাতে গন্ধময় এর অন্দরমহল। আসলে আন্দামানের পুরো ভ্রমণটাই একটা ভিজ্যুয়াল ট্রিটমেন্ট। প্রকৃতির আপন খেয়ালে গড়ে ওঠা অপরূপ সৌন্দর্যের অনির্বাণ দৃশ্যায়ন। সম্মোহিত হই, মনে হয় এই বিস্ময়-সৃষ্টি জীবন্ত হয়ে আমার চোখের সামনে যেন  নৃত্যভঙ্গিমার নানা আবেদনে মনোরঞ্জনের পসরা সাজিয়েছে। চোখ

সবুজদ্বীপের ডায়েরি (আন্দামান পর্ব-১০) | Sobujdweeper Diary Ep#10

Image
সবুজদ্বীপের ডায়েরি  ।  আন্দামান পর্ব-১০ সবুজদ্বীপের ডায়েরি । 29th February 2020  । ভোর  ৫ টা ........ সঞ্জয় 'বেড টি' দিতে এল। ঘুমটা বেশ জব্বর হয়েছে। চায়ের কাপে  চুমুক দিতে দিতে মনে হল কালকের বাকি অভিজ্ঞতাটুকু লিখেই ফেলি। আগামীকালই তো ফেরার পালা। আজকের বেড়ানোর কাহিনীও তো লিখে ফেলতে হবে এরই মধ্যে। ডায়েরি নিয়ে বসলাম.................   ডানদিকে জারোয়াদের দ্বীপ আর বাঁহাতে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল পার করে ছোট স্পিড বোট একটা খাঁড়ির মধ্যে নোঙ্গর করল। স্পিড বোট থেকে নেমে পা রাখতে হবে একটু উঁচু গাছের গুঁড়ি দিয়ে তৈরী সিঁড়ির ধাপে। ঠিক সেখান থেকেই শুরু হয়েছে দু'প্রান্তে বাঁধা সরু দড়ি ও কাঠের তৈরী একটা সাঁকো। নিচে কুলকুল করে বয়ে চলা backwater-এর ছোট্ট বিভাজিকা। এলোমেলো পাথর, নুয়ে পড়া গাছের সবুজ কলি। আর অদৃশ্য পাখির কল-কাকলি। মনে হচ্ছে সাঁকোতেই দাঁড়াই কিছুক্ষণ। প্রকৃতি এতো অপরূপ কেমন করে হয় ! মোবাইল ক্যামেরায় বেশ কয়েকটি বাহারি ছবি তুলে সাঁকো পেরিয়ে সামনের সমতলে পড়লাম। বাঁদিকে বোর্ডের লেখায় চোখ পড়ল - ১.২ কিমি দূরত্বে Lime Stone Cave - আমাদের আজকের দ্রষ্টব্য। বেশ একটা এক্সপেডিশনে যাবার মতো পরিস্থি

সবুজদ্বীপের ডায়েরি (আন্দামান পর্ব-৯) | Sobujdweeper Diary Ep#9

Image
সবুজদ্বীপের ডায়েরি  ।  আন্দামান পর্ব-৯ সবুজদ্বীপের ডায়েরি । 28th February 2020  । রাত  ১১ টা ........ আশঙ্কা যেখানে অমূলক, দুশ্চিন্তা সেখানে অহেতুক যন্ত্রণার উৎস। সেই ব্যামোতেই আমাদের বেশ কয়েকজনের রাতে ভাল করে ঘুমই হলো না । সবাই ঘুম থেকে ও বাসে সময়মত উঠতে পারব কিনা, এই ছিল দুশ্চিন্তার প্রধান হেতু। এরপরে আবার ৪৭ কিলোমিটার রেইন ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে পথ পেরোনো - সব মিলিয়ে উত্তেজনার পারদ মধ্য রাতের হালকা ঠান্ডাতেও উর্দ্ধগামী।  দেখলাম, কুন্ডুর স্পেশাল নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের দলের প্রত্যেকটা পরিবারই রাত দেড়টার অনেক আগেই লবিতে উপস্থিত। শৃঙ্খলার সঠিক অনুসরণের কারণে তাদের হাবে-ভাবে দিগ্বিজয়ের অনুচ্চারিত আভাস। বাস ছাড়ল যথাসময়ে পৌনে দুটোয়। রাতের আন্দামান একদম শুনশান - হাতে গোনা কয়েকটা গাড়ির হেডলাইট চোখের ওপর দিয়ে ক্ষণিকের চমক জাগিয়ে গেল। আমাদের বাস সাউথ আন্দামান ছেড়ে প্রথমবারের জন্যে এগিয়ে চলল মধ্য ও উত্তর আন্দামানের দিকে। প্রায় সাতচল্লিশ কিলোমিটার পথ পার হতে হবে ট্রপিকাল রেইন ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে, যেটা নাকি পুরোটাই আন্দামানের সবচেয়ে পুরনো উপজাতি জারোয়াদের এলাকা। তাই, এখানে চেকপোস্ট পার করতে হবে, কোন

সবুজদ্বীপের ডায়েরি (আন্দামান পর্ব-৮) | Sobujdweeper Diary Ep#8

Image
সবুজদ্বীপের ডায়েরি  ।  আন্দামান পর্ব-৮ সবুজদ্বীপের ডায়েরি । 28th February 2020  । রাত  ৯ টা ........ আজকের জার্নিটা একটু বেশিই হয়েছে। আমাদের এই দলে বেশির ভাগই প্রৌঢ় - এদের মধ্যে সন্তানসহ এসেছেন এমন তিনটি ফ্যামিলি পেলাম। বাকিরা বয়সকালের গন্ডি পেরিয়ে স্বামী-স্ত্রী মিলে আস্থা ও নির্ভরতার মধুচন্দ্রিমা। ভালোবাসার রূপ যদি অন্যের চোখে প্রতিভাত হয় বা ধরা পড়ে, তখন আশপাশের পৃথিবীটাকে নতুন করে ভাল লাগে। আজকের ভোর রাতের দলবদ্ধ তোড়জোড় আর সারাদিনের শারীরিক ধকল নিয়ে অপূর্ব এক ভ্রমণ-পরবর্তী আমেজ এমন করেই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ভালবাসার অন্তর্নিহিত বিশ্বাসকে রাজ-সমারোহে চোখের সামনে এনে বসিয়ে দিল। কেন এমন মনে হলো আমার, সে কথা আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠা মুহূর্তগুলোই বলে দেবে।  মাঝরাত্রে মাঝরাস্তায় সবে-জন্মানো বিড়ালছানা ডাক্তার চৌধুরীর খুব কষ্ট হয়েছে আজ। আসলে অনেকটা বাস-জার্নি, তার ওপর বারাটাং দ্বীপেও বেশ খানিকটা চড়াই-উৎরাই ওনাকে খানিকটা কাহিল করেছে। ডাক্তার বৌদিকে সপ্রশংস মুখে বলতে শুনলাম, দৈনন্দিন কাজের প্রেসার, ছেলেকে মানুষ করা থেকে সরকারি দপ্তরে নিয়মের প্রবল কড়াকড়ি - চারিদিকের এই চাপে কেমন করে ডাক্তারের এ