Posts

Showing posts from April, 2021

উপসংহার (কবিতা) by তপন বসু

Image
উপসংহার (কবিতা) রেললাইনে মাথা রাখা যায় নিশ্চিন্তে - মাথা কাটা যাবার ভয় নেই লজ্জায়-বেদনায়                                     রেললাইন আজ মুখ ঢেকেছে ঘাসে।  ভ্রমণ নেই দর্শন নেই - গতিতে খুশির বর্ষণ নেই                                     জীবন স্থবির অতি মহামারীর ত্রাসে।। কারও পরিবারে মৃত্যু-শূন্যতা                                          কোন দম্পতির শিয়রে নতুন প্রাণ - কোন হাসপাতালে অবহেলায় শায়িত রুগী                                          ভাষাহীন চোখে অপেক্ষার বলিদান।। চাকরির চিঠি হাতে পেয়েছিল অর্জুন ;                                        দেশের শ্রেষ্ঠ জৈব-রাসায়নিক ল্যাবে - এ সংবাদে তার গোটা পরিবার  সাজিয়ে রেখেছিল সেই চিঠিখানি -                              দেওয়ালে,মোবাইল ফোনে ও ট্যাবে।।  বারান্দা থেকে মালতীলতা                                  ঝুলে পড়েছে খালি রাস্তায় - ফুলের দিকে কারোরই পড়ে না চোখ,                                 স্থবির বর্তমানে ভবিষ্যৎ নিরুপায় ।  মাঝখানে ক'টা প্লেন উড়েছিল কতিপয় কিছু যাত্রী নিয়ে -                                          তার লিখিত নির্দিষ্ট গন্তব্

পাগল (কবিতা) by তপন বসু

পাগল (কবিতা) । তপন বসু  এলোমেলো শুধু পথ চলা  আর নিজের সাথেই কথা বলা  এ পাগল ঢং জানে না  পাগল বড়ই খোলামেলা।  এই খোকা, তুই এখানে কেন ? স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখা ! তুই না জাতির ভবিষ্যৎ ? খোকা, তুই ছাড়া তোর মা যে একা ! ভুল রাস্তায় পা ফেলা ছেলে  কি ভেবে ফেরে স্কুলের পথে  এ পাগল সং সাজে না - শাসন করে শক্ত হাতে।  আজ যত সব পাগলগুলো  এক হয়েছে নীতির দ্বারে  রাজনীতি আর অর্থনীতি  না বুঝেই বিলোচ্ছে অকাতরে।  সেই পাগলের খুব প্রয়োজন  যার কিছুতেই আসক্তি নেই  স্বার্থ ছাড়াই লোকের মাঝে স্বপ্ন বিলোয় এই সমাজেই।  দূর থেকে শুনি বাউল কণ্ঠ  'আমি কোথায় পাব তারে' বাউল কবি  পাগল এবার - ওই তো ! বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।  তপন বসু / ২৪ এপ্রিল ২০২১

"বৃষ্টি ভিতর ঘরে" | কবিতা by তপন বসু | Bristi Bhitor Ghore (Poem)

Image
কবিতা "বৃষ্টি ভিতর ঘরে" বৃষ্টি পড়ছে মনের ঘরে          ভিজছে ভালবাসা, বাইরে শরীর ক্ষত-বিক্ষত         দোদুল্যমান আশা। অনেক স্বপ্ন শরীরে পুড়েছে          রোদ-আকাশের গায়ে, তবুও শরীর বেঁচে আছে          মনের আঙ্গিনায়। সংসারগামী দ্বিপদ কাঠামো  ঠিক-ভুলের দুই প্রান্তে, অনেক ইচ্ছে না-ফোটা ফুলে    ঝরেছে একলা বসন্তে। মন ও শরীর যখনই পাঠিয়েছে  বার্তা তাদের সংসারে  মধ্যমজান বিধিনিষেধ   তা' উড়িয়ে দিয়েছে নির্বিকারে।  আজ বৃষ্টি অন্যরকম          মন ভেজাতে চায়। শরীর-চাদর সজীব হয়েছে  প্রকৃতির, স্পর্শ উষ্ণতায়।  অঝোর ধারা আবার করে             সবুজ করেছে মন - পিলসুজে তেল কম পড়লেও  দেখি, আলোর আয়োজন।  নতুন সূর্য,ভোরের আলো  আবার করে লাগছে ভালো  বৃষ্টি-স্নানে স্নিগ্ধ সকাল  নিভিয়ে দিয়েছে অপ্রত্যাশিত কালো।   এই পৃথিবী বড় অভিজাত - সুন্দরের পূজায় সুন্দরতর, ওঠো হে অনুভব, জাগো হে চেতনা  নতুন প্রাণের আবির্ভাবে - আজ নিজেকে উজাড় করো।                                  || তপন বসু ||                             (২২/০৪/২০২১)

ভুল । কবিতা by তপন বসু

Image
  ভুল । কবিতা  স্মৃতির পথে বাউল সাজবার জানি না কি প্রয়োজন ? তবু, স্মৃতিকে ঘিরেই কতো রোমাঞ্চ, কতো না শিহরণ।     এই তো সেদিনের কথা - বাবার মুখে নেবুলাইজারের নল, বুকে নকল হৃদযন্ত্র  মৃত্যুশয্যায় ইঙ্গিতে বোঝালেন, 'শান্তি যদি পেতে চাস, কইবি কম শুনবি বেশি  দেখবি, সেটাই সুখে বাঁচার আসল মন্ত্র'।  কথাগুলোর অনুরণন ছায়া হয়ে আনাচে কানাচে, মৃত্যুর পদধ্বনি স্পষ্ট হলো, চলে গেলেন তিনি মেয়াদশেষে - আমি আজও আছি, বেঁচে ........ সভ্যের হাতে অসভ্যতার কালো দেশে।  আমার আগামী পৃথিবী স্বচ্ছ, হলেও বা ভারি সুন্দর পুরোনো আনন্দে, নতুন অভিমানে আজও বুকে জমে কান্না  অমৃতের পেয়ালায় বিষের চুমুক - এই অভ্যেসে, মন যে আর এগোতে চায় না।। তপন বসু / ১লা বৈশাখ ১৯২৮ (15th April 2021) / কলকাতা  পাদটীকা :- নির্বাচনের বাজারে স্বার্থলোভীর প্রচারে স্বার্থত্যাগীরা নিষ্পেষিত। সমাজব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার রাজদণ্ডের হাতে। তবুও আমার স্থির বিশ্বাস, একদিন সত্যের জয় হবে। মানুষের মনের রঙ আর পৃথিবীর রঙ - দুটোই হবে সবুজ। কিন্তু এখন যে বড়ো কষ্ট হচ্ছে শ্বাস নিতে। বাঁচব কোন অপেক্ষায়, কিসের প্রতীক্ষায় ? প্রাণভ্রমরা যে আলা

সেদিন চৈত্রমাস । কবিতা || Sedin ChoitraMas (Poetry)

Image
সেদিন চৈত্রমাস । কবিতা তখন আমি চব্বিশ কি পঁচিশ - ডাক পড়ল প্রবাসে, সুদূর আমেরিকায়। বাঙালিরা আমার গান শুনতে চায় আমার গান মানে রবিঠাকুর, আর তার পরবর্তী সময়ের গান - সবটাই অন্যের থেকে ধার নেওয়া। তবু, আমার সেই গানেই 'তুমি' মন্ত্রমুগ্ধ ! তুমি থাকতে আমাদের ঠিক পাশের পাড়ায় - আমার বাড়ির সামনে দিয়েই  তোমার স্কুলের রাস্তা। বন্ধু ছিলাম আমরা  মিলেছিলাম আপন হতেই, খেলার ছলে, গানের টানে। প্রতিদিন সকালে স্কুলের পথে  আমাদের দোতলার বারান্দার দিকে - তোমার চোখ পড়ত ; একদিন আমার চোখে পড়ে গেল।  তৈরী হল নতুন অভ্যেস - সকাল ছ'টায় চোখ মেলে জেগে ওঠা, চোখে চোখ রাখব বলে।  তারপর চলতো টানা রেওয়াজ - বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে  খেলার মাঠে ; তুমিও আসতে - তোমার বান্ধবীদের সাথে নিয়ে। দুটি পরিবারই জানত  আমরা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সুখ-দুঃখের সমব্যাথী ; কোন আড়াল ছিল না একে অপরের কাছে - আত্মপ্রকাশে। বুঝতাম, বন্ধুত্বের বাইরেও  আমার গান তোমায় টানে। সেই গান নিয়ে আজ আমি প্রবাসের পথে; আমার এমন সৌভাগ্যে  তোমার আকুলতা - আমায় সারা আকাশপথ মেঘলা রেখেছে। হোটেলে পৌঁ