সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৭) | Sagarparer Diary (Episode-7)
সাগরপারের ডায়েরি
পর্ব-৭
আজকের প্রসঙ্গ : নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
টানা ১৯ ঘন্টার উড়ানের পরেও কোনরকম ক্লান্তি বোধ করলাম না। এবার জানলা দিয়ে নিউ ইয়র্ক শহরটা চোখে পড়ছে, এখানে সময় দুপুর ৩টে। আটলান্টিকের পারে টানা একটা রাস্তা, রাস্তার অপর প্রান্তে ব্যাক-ওয়াটার ঢুকে একটা খাঁড়ির মতো তৈরী করেছে। দেখতে পেলাম নিউ ইয়র্ক শহরের উত্তুঙ্গ অট্টালিকাগুলো - হয়তো ১০০ তলার নিচে কোনটাই নয়। ছোট ছোট মডেলের মতো রকমারি রঙে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মহাসাগরের পারে। এই জাগাটাকেই বলে 'ম্যানহাটান'। আমি ছবিতেই বহুবার দেখেছি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, বিখ্যাত টুইন টাওয়ার, পাশে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি - একটা প্যানোরামিক দৃশ্যপটে ধরা পড়ছে সব কিছু। এবার এসব চাক্ষুষ করার অপেক্ষায় সশরীরে। অতলান্তিক পার করে এবার প্লেন নামবে। আমার স্ত্রী স্বপ্না বলছিল,"বাবা রে ! এতো ঘন্টা ধরে একটা মহাসাগর পার হওয়া - কি excited লাগে, তাই না !
John F Kennedy Airport - পৃথিবীর ব্যস্ততম। প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্লেন এখানে ওঠানামা করে। Airport-এ আমেরিকান সাহেবদের security Checking একটু বেশিমাত্রায় বজ্র-আঁটুনি। Immigration-এ ভীরু পদক্ষেপেই কাগজপত্র সমেত দশাসই-মার্কা এক আমেরিকানের মুখোমুখি হলাম। তাঁর নানা প্রশ্ন। যেন কোন অপরাধে এসে পড়েছি, আর উনি আমাকে পাকড়ে ফেলেছেন এবং নিজের পদোন্নতি নিশ্চিত জেনে এবার show-off শুরু করতে চলেছেন। এসে পড়েছি যখন - পড়েছি এদের হাতে - কিছু করার নেই। 'বাধ্য ছাত্রের মত' দেখনদারিতাই আমার জন্যে শ্রেয় মনে করলাম।
আমার আমেরিকা সরকারের endorse করা উপযুক্ত ভিসা ছিল - যেই বললাম কালচারাল প্রোগ্রামে এসেছি এবং রবীন্দ্রনাথের গানই বিষয় - চোখের সামনে ম্যাজিক দেখলাম। রীতিমতো উৎসাহ-পূর্বক বাহবা জানিয়ে তিনি বললেন,'এতো কম সময় নিয়ে এসেছেন, আমাদের দেশটা একটু ঘুরে দেখবেন না ? আপনার VISA আমি extend করে দিচ্ছি'। ভেতরে কেমন একটা অস্বস্তি হতে থাকল - এনাকে ঠিক কোন আসনে বসাবো, বুঝতে পারলাম না। মন কি রকম বিহ্বল হয়ে পড়লো - তা আনন্দে না অহংকারে - আবছাই রইল। নিশ্চিত হলাম - আমেরিকাতে প্রবেশাধিকার আমার আছে। ইমিগ্রেশন কাউন্টার থেকে অব্যাহতি পেয়ে প্রথমেই প্রণাম জানালাম তাঁর পায়ে - সেই আবার 'রবীন্দ্রনাথ'।
©tapan basu. all rights reserved.
Picture Courtesy > (1)shutterstock.com (2)loving new york
পর্ব-৭
আজকের প্রসঙ্গ : নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র


আমার আমেরিকা সরকারের endorse করা উপযুক্ত ভিসা ছিল - যেই বললাম কালচারাল প্রোগ্রামে এসেছি এবং রবীন্দ্রনাথের গানই বিষয় - চোখের সামনে ম্যাজিক দেখলাম। রীতিমতো উৎসাহ-পূর্বক বাহবা জানিয়ে তিনি বললেন,'এতো কম সময় নিয়ে এসেছেন, আমাদের দেশটা একটু ঘুরে দেখবেন না ? আপনার VISA আমি extend করে দিচ্ছি'। ভেতরে কেমন একটা অস্বস্তি হতে থাকল - এনাকে ঠিক কোন আসনে বসাবো, বুঝতে পারলাম না। মন কি রকম বিহ্বল হয়ে পড়লো - তা আনন্দে না অহংকারে - আবছাই রইল। নিশ্চিত হলাম - আমেরিকাতে প্রবেশাধিকার আমার আছে। ইমিগ্রেশন কাউন্টার থেকে অব্যাহতি পেয়ে প্রথমেই প্রণাম জানালাম তাঁর পায়ে - সেই আবার 'রবীন্দ্রনাথ'।
সংস্থার তরফে গাড়ি আসবে। বাইরে বেরিয়ে দেখি রং-বেরঙের সব গাড়ি - কলকাতায় যেমন ছোট গাড়ির চল বেশি - এখানে বড় সেলুন কার। বাড়ির যতোগুলো মাথা, ততগুলো করে গাড়ি। আমার পুত্র বুবলুকে ফোন করতেই ও খুব উত্তেজিত - 'বাবা, দেখেছো তো ? এগুলোকেই গাড়ি বলে, Limuzin, BMW, Audi - যেমন রাজকীয় নাম তার, তেমনি রাজকীয় চেহারা। দামের কথা ভাবলে কেমন অসহায় লাগে ! লাল রঙের মস্ত এক টয়োটা নিয়ে ডঃ গুহ নিজেই চলে এসেছেন - সুপর্ণাদির husband। তার প্রথম কথাবার্তাতেই বড় আপন করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি।
আন্তরিকতা আর বাঙালির আমন্ত্রণে আসা - দুইয়ে মিলিয়ে বিদেশকে পরবাস মনে হচ্ছে না। সমস্ত মালপত্র নিয়ে বিপ্লবদা চড়ে বসল ওই গাড়িতে।
আমরা রওনা হলাম আরেকটি গাড়িতে - যার মালিকের নাম ....... .......... থাক, তার গল্প পরের পর্বে।
সাগরপারের ডায়েরি/তপন বসু/পৃষ্ঠা-৭/চলবে ..........
©tapan basu. all rights reserved.
Abr utkontha roye galo porer porbo porar.😍🙏
ReplyDeleteএই উৎসাহ আর উৎকণ্ঠাই তো আমায় বাঁচিয়ে রাখবে।
Delete