সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-৮) | Sagarparer Diary (Episode-8)

সাগরপারের  ডায়েরি
পর্ব-৮
আজকের প্রসঙ্গ : নিউ জার্সি'র পথে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র


আমাদের গাড়ি নিউ ইয়র্ক এয়ারপোর্ট ছেড়ে এগিয়ে চলল সামনের দিকে। এই গাড়িতে চালকের আসনে যে ভদ্রলোক তার নাম পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। প্রায় ১৭-১৮ বছর ধরে আমেরিকার বাসিন্দা। বিকেল গড়িয়েছে, তবু সূর্যের আলোর জোর কমে নি। পশ্চিমের দেশ তো ? ...... যেতে হবে নিউ জার্সি।

নিউ ইয়র্ক থেকে নিউ জার্সি - ১ ঘন্টার কিছু বেশি সময়ের পথ। দু'টো আলাদা রাজ্য বা স্টেট - দু'টোর নাম শুরু 'নিউ' কথাটা দিয়ে। সে নাম সার্থকও বটে - পুরোনো বা মলিনতা এ দুই শহরকে ছুঁয়েছে বলে মনে হয় না। নিউ জার্সি'র কথায় পরে আসছি। JFK Airport থেকে হাইওয়েতে পড়া গেল - ৮ লেনের রাস্তা - কিছুদূর অন্তর অন্তর পথ-নির্দেশিকা। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার - প্রতিটি নির্দেশিকাই আস্ত, মনে হল গতকাল যেন লাগান হয়েছে। 

প্রায় মিনিট ২৫ চলার পর পার্থবাবু বললেন,'চলুন, একটু কফি খাওয়া যাক। হাইওয়ে'র ধারে Dunkin' Donuts-এর একটা দোকান বা কফিবার। বেশ কিছু স্নাক্স ও কফি নেওয়া হল - বুঝলাম পার্থবাবু খেতে ও খাওয়াতে ভালবাসেন। বাঙালির প্রথম পরিচয় এখানে হারায়নি। এই কফি শপ-এর দুই কর্মরত মহিলাকেও দেখলাম বেশ দশাসই - যে তিনজন আমেরিকানকে এখনো পর্যন্ত দর্শন করলাম তাদের কারোর পক্ষেই আমাদের বরানগরের বাড়ির সাড়ে তিন ফুটের দরজা পেরিয়ে প্রবেশ করা প্রায় অসম্ভব। 

অত্যন্ত সুস্বাদু স্নাক্স আর কফি অন্ত:স্থ করে আবার পথে নামলাম। বাঁদিকে মাঝে মধ্যেই আটলান্টিক গায়ের ওপর এসে পড়ছে। এখানে গাড়ি চলে রাস্তার ডানদিক বরাবর - Left Hand Drive |

পার্থবাবু বললেন,'সামনেই আমরা একটা ব্রিজ পার হবো - যার নিচে
Hudson River'। এই হাডসন নদী নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সি - দুই শহরকে ভাগ করেছে। ঠিক আমাদের হুগলী নদীর দুপারে যেমন কলকাতা ও হাওড়া। ছোট ছোট ডিঙি নৌকো মত চোখে পড়লো - দুপারে দাঁড়িয়ে। পুরোন আমেরিকার কিছু স্মৃতি  বাড়ির গঠনশৈলীতে ধরা পড়ছে। আমেরিকার বেশ কিছু সিনেমার পরিবেশনার গোড়ার দিকে বা Front Title-এ এমন দৃশ্যাবলীই দেখা যেত। ম্যানহাটান-এর স্কাইলাইন অথবা হাডসনের তীরে নিউ ইয়র্ক শহর। 

পার্থবাবু বেশ ভাল গাইড। বলে চলেছেন,'আমেরিকায় পেট্রল এত সস্তা আর এক একটা শহর এতটাই জায়গা জুড়ে যে গাড়ি ছাড়া কেউ এক পাও নড়ে না।' সত্যিই তাই, লক্ষ্য করলে দেখা যাবে প্রতি গাড়িতেই একজন মাত্র আরোহী, বুঝতে অসুবিধে হয় না যে একটু অবস্থাপন্ন প্রতিজনেরই নিজস্ব একটি নির্দিষ্ট গাড়ি রয়েছে। এতো সুষ্ঠূভাবে রাস্তার বুলেভার্ডগুলো আর এত ফ্লাইওভার ও বহির্গমনের রাস্তা, যে আমাদের কোন সিগনালেই বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হল না। 

পৌঁছলাম ডঃ গুহ'র নিজস্ব চেম্বারে। সে আবার অন্য গল্প .......... আরেক দিন না হয় বলা যাবে। আজ এই পর্যন্ত। .......

সাগরপারের ডায়েরি/তপন বসু/পৃষ্ঠা-৮/চলবে ..........

'সাগরপারের  ডায়েরি'র পর্ব-৯ পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন। 
'সাগরপারের  ডায়েরি'র ১ম পর্ব পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন। 

©tapan basu. all rights reserved.
Picture Courtesy > (1)shutterstock.com (2)structuremagazine

Comments

  1. Eto sundor bornona bhaba jayna..jibon dorson jano

    ReplyDelete
  2. দারুন উপভোগ করলাম দাদা ।।।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

তপনের ডায়েরি ৭ / ৩১ আগস্ট ২০২১

তপনের ডায়েরি ৫ / ৫ আগস্ট ২০২১

স্টেরয়েড ছোট গল্প রচনা : তপন বসু