বড়ো বিস্ময় জাগে (পর্ব-৭) | Baro Bismay Jaage (Episode-7)
বড়ো বিস্ময় জাগে
পর্ব-৭
বড়ো বিস্ময় জাগে............
©tapan basu. all rights reserved.
Picture Courtesy > (1)banglapedia (2)sanjib chatterjee/printerest/blogspot
পর্ব-৭
আমরা যেমন বিস্মিত হই নতুনত্বের বৈচিত্র্যে, তেমনই বালক রবীন্দ্রনাথও অবাক হতেন শিশুকাল থেকে বিশ্বের নানা বৈচিত্র্যে। আর তাঁর সেই জিজ্ঞাসাকে উস্কে দিতেন তাঁর পিতৃদেব মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ।
Maharshi Debendranath Tagore |
২ মাস হিমালয় অঞ্চলে বসবাসকালে উচ্ছসিত মহর্ষি একদিন পুত্রকে দেখিয়েছিলেন 'পাথরেও ফুল ফুটে আছে'। এ যেন পিতা-পুত্রের যুগপৎ বিস্মিত হবার পালা। ঈশ্বরের সকল সৃষ্টিই বড়ো আশ্চর্যের - নইলে ৮০ বছরের দীর্ঘ জীবনে কেন বারবার গুরুদেব প্রণতি জানিয়েছেন ঈশ্বরের পায়ে ? তাঁর সৃষ্টির সমস্ত আলো ধরা দিয়েছে কবির চোখে - যে আলোয় সৃষ্টি হয়েছে ছবি/কবিতা/গান। ... আরও কত সংস্কৃতি চর্চা !
শিশুমন কৌতূহলের অবারিত উৎসদ্বার। অনর্গল প্রশ্নবাণে পিতা-মাতাকে জর্জরিত হতে হয় প্রায় প্রত্যেক পরিবারেই। কিন্তু কৌতুহল যদি শিশু বয়সেই অ-সাধারণত্বকে প্রকাশ করে ? সে কথাই এবার বলব। আগের পর্বেই লিখেছিলাম, সাধারণ আর অসাধারণের যে তফাৎ, তা তো তাদের কার্যবিধিতেই প্রতিভাত হবে। বিশ্লেষণকে জোরালো করতে অনেকেরই জানা একটি তথ্য তুলে ধরতে চাই, যেখানে রবীন্দ্রনাথের চিন্তাশক্তি ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বাল্যকাল থেকেই কতটা গভীর ছিল, তা আমরা বুঝতে পারবো।
৭ বছর বয়েসে নিয়মমাফিক ভর্তি হন 'ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুলে' - পরে ১৩ বছর বয়সে অন্যান্য ভাইদের সঙ্গে 'সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে' আবার নতুন করে ভর্তি হওয়া। অমনোযোগী ছাত্রের সেখানেও ঠিক সুবিধা না হওয়ায় গৃহে শিক্ষাদানের নানা প্রচেষ্টা করা হয়। অথচ অন্য দিকে ওই বালক-মন বলছে "জ্যোতিদাদার রচিত "সরোজিনী" নাটকে গানের উপস্থিতি ভীষণ প্রয়োজন।
Rabindranath with Jyotidada |
১৮৭৫ সালে এই গানটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর (রবীন্দ্রনাথের নতুনদাদা, মহর্ষির পঞ্চম পুত্র) স্মৃতিচারণায় বলছেন -
..... রবির পড়ার ঘরে বসিয়াই "সরোজিনী" নাটকের খসড়া সংশোধন করিতাম।পাশের ঘর হইতে রবি শুনিতেন আর মাঝে মাঝেই কোন স্থানে কি করিলে ভাল হয়, তার মতামত প্রকাশ করিতেন। নাটকে রাজপূত মহিলাদের চিতায় প্রবেশের একটি দৃশ্যে আমি গদ্যে বক্তৃতা রচনা করিয়াছিলাম। গদ্য রচনাটি এখানে একেবারেই খাপ খায় নি বুঝিয়া রবি একেবারে আমাদের ঘরে আসিয়া হাজির। তিনি বলিলেন - 'এখানে পদ্য রচনা ছাড়া কিছুতেই জোর বাঁধিতে পারে না'। আমি সময়াভাবে এখন পরিবর্তনের আপত্তি উত্থাপন করিলে রবীন্দ্রনাথ সেই গদ্য অংশের পরিবর্তে একটি গান রচনা করিয়া দিবার ভার লইলেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই "জ্বল জ্বল চিতা দ্বিগুন দ্বিগুন" গানটি রচনা করিয়া আনিয়া আমাদের চমৎকৃত করিয়া দিলেন।প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ তখন ১৮৭৫-এর ১৪ বছর ৬ মাস বয়সের ইস্কুল পালানো এক কিশোর, যাকে নিয়ে বাড়ির লোকের অভিমত 'এর কিছুই হবে না'।
বড়ো বিস্ময় জাগে............
আজ তবে এইটুকু থাক, কারণ একেবারে শিশুবয়সে বালক রবির কিছু বিস্ময়কর গল্প আর আমার কথা শোনাব ....... পরের পর্বে।
বড়ো বিস্ময় জাগে/তপন বসু/পৃষ্ঠা-৭/চলবে ..........
©tapan basu. all rights reserved.
Picture Courtesy > (1)banglapedia (2)sanjib chatterjee/printerest/blogspot
Comments
Post a Comment