বড়ো বিস্ময় জাগে-পর্ব-১ | BARO BISMAY JAAGE (EPISODE-1)
বড়ো বিস্ময় জাগে
( মানুষ রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে গিয়েই তাঁর সম্পর্কে আরো অন্বেষণ - একটি ধারাবাহিক রচনা )
[ গোড়াতেই স্বীকার করে নেওয়া ভালো যে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বা তাঁর কাজ নিয়ে কোনো বিশ্লেষণে যাবো, এমন সাধ্য বা ধৃষ্টতা কোনোটাই আমার মানায় না। ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা জীবনের ছায়াসঙ্গী হিসেবে যাকে চিনতে শিখেছি নানা ভাবে, তার কিছু অনুভবের কাহিনী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রইলো এই লেখনীতে। যখন যেমন পড়েছি তাঁকে নিয়ে, স্মৃতির মণিকোঠায় কেমন করে জমা হয়েছে বলতে পারি না। তবে বেশ বুঝতে পারছি, তিনি ধরা দিচ্ছেন অসীম উদারতায়। আমি ভেসে চলেছি তাঁরই তরীর যাত্রী হয়ে। বইয়ে পড়া অক্ষরগুলো দৃষ্টিগোচর হচ্ছে, ধার করছি দীনতায়, এর জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। যে বইগুলির নাম এখনই মনে পড়ছে আর যাদের কাছে আমি এই লেখার সাহস পেয়েছি, তাঁদের নাম স্বীকার করে আমার দুঃসাহসের ভার লাঘব করতে চাই। শ্রী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় (যাঁর কাছে আমার রবীন্দ্রনাথের প্রথম পাঠ), শ্রী জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (যাঁর গান লেখার প্রথম অনুপ্রেরণা স্বয়ং রবিঠাকুর এবং যাঁর শিক্ষা ও গান সম্পর্কে জ্ঞানের আলো আমাকে গানে গানে বাঁধা পড়তে শিখিয়েছে), পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী (ভারতীয় সংগীতের বিশালত্ব সম্পর্কে আগ্রহ ও সামান্য ধ্যানধারণা যাঁর অকৃপণ ঔদার্যে আমার প্রতি বর্ষিত হয়েছে), শ্রী শোভন সোম (একটি জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান পরিচালনা করবার সুবাদে যাঁর কাছে বসে নিজের ইচ্ছেকে কিভাবে অন্বেষণে রূপান্তরিত করতে হয়, তা শিখেছি)। এ ছাড়াও বহু শিল্পী-বন্ধু তাঁর ভালোবাসা ও কাজের সহযোগিতায় আমাকে শেখানোর চেষ্টা করেছেন নিরন্তর, ঋণ স্বীকার করি তাদের কাছেও। সংগীতচিন্তা, ছিন্নপত্রাবলী, গীতবিতানের জগৎ, আপনি তুমি রইলে দূরে, গানের লীলার সেই কিনারে, গানের ঝর্ণাতলায়, দিনগুলি মোর, জীবনের ধ্রবতারা ইত্যাদি বইগুলির কথা উল্লেখ না করলে বড়ো অন্যায় হবে। কারণ, আমার মাথায় প্রতিদিন নতুন সংগীত-ভাবনা ও মনে অদেখা আলোর উন্মেষ ঘটিয়েছে এই বইগুলির সাদায়-কালোয় ধরে রাখা বুদ্ধিজীবিদের চিন্তা, তাঁদের দর্শন। ]
পর্ব-১
আমাদের রবীন্দ্রনাথ।
নিজের জীবন নিয়ে মেতে থাকা আমাদের জীবনচর্চার নিত্যসঙ্গী। আমাদের রুচিবোধ, শিক্ষা, রবিজীবন সম্পর্কে আগ্রহ যেমন তাঁকে আরো আপন করেছে - তেমনি দৈনন্দিন কাজে জীবনখেয়া বেয়ে চলা নানা শ্রেণীর মানুষের কাছেও তিনি পৌঁছেছেন বন্ধু হয়ে - কখনো গানে, কখনো বা অন্যধারায়।
তিনি আমাদের আপনজন - প্রিয়সখা - আমাদের রবীন্দ্রনাথ। অন্তরের আবেগ দিয়েই আমরা যে কোনো মানুষ ছুঁতে পারি তাঁকে, অত্যন্ত সহজে। বিশেষ কোনো শিক্ষার তখন বড়ো একটা প্রয়োজন পড়ে না।
এই প্রসঙ্গে দুটি লাইন খুব বলতে ইচ্ছে করছে। বেশ কয়েকদিন আগে লাইনগুলো মনে এসেছিলো।লিখে রেখেছিলাম।
রবীন্দ্রপ্রেম.........
এই ধরণীর ধুলির পরে নাম লিখে যাই তোমার তরে
দেখবে মাটি বুকের জলে নাম রয়েছে হৃদয়তলে ।
ঝরাপাতাদের মর্মরতায় কাঁপন লাগে নামের দেহে,
মাটির বুকে বন্দি জলে স্নাত হয় সে পরম স্নেহে।
মাটির টানেই বেঁচে থাকা রাস্তা যতই আঁকা-বাঁকা;
তবু তো পথ ছুটে দিয়েছে অসীম আকাশপানে -
সে তো সেই প্রকৃতিরই আপন মোহটানে।
পথিক হয়ে সেই পথেরই একটি নিঝুম কোণে
লিখেছি নাম মায়ার টানে শিথিল বিবশ মনে।
মাটির কাছেই সঁপে দিলাম মন-বাউলের কথা,
পার্থিব প্রেম পৃথিবীর বুকে লিখে রাখুক গাথা।
আগামী দেখবে এমন প্রেমের কাহিনী ফিরে ফিরে,
রবির কিরণে কালো আলোকিত কার্বন সেথা হিরে ।।
তপন বসু / পৃষ্ঠা-১ / চলবে ......
Anek kichu porar agroho bere galo ro.somridho hocchi ektu ektu kore...bakita porar asay path cheye roilam.🙏🙏🙏🙏
ReplyDeleteThank you so much.
Deleteঅন্তরের আবেগ দিয়েই কী চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছ অত্যন্ত সহজ ভাষায়।
Delete