সাগরপারের ডায়েরি (পর্ব-১২) | Sagarparer Diary (Episode-12)
সাগরপারের ডায়েরি
পর্ব-১২
আজকের প্রসঙ্গ : নিউ জার্সি'র সমুদ্র-সৈকতে
সন্ধে ৬টা বাজে - যথেষ্ট আলোকিত বহির্জগৎ। আমার ভিতর-জগৎ অমাবস্যার ঘন অন্ধকারে ঢাকা। সংগঠকরা সকলেই যথেষ্ট অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন। লোকমুখে শোনা ভালো Sound Engineer-কেই ওনারা দায়িত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু তার কান্ড-কারখানায় প্রত্যেকেই যুগপৎ বিস্মিত ও চিন্তিত। নামটিও তার কাজের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই - 'মাইক', কিন্তু সে নামের পূর্বে বর্ণমালার প্রথম স্বরবর্ণটি যোগ করার প্রবল ইচ্ছেকে কিছুতেই দমন করতে পারছি না।
যন্ত্রগুলো কঠিন দুঃখে নীরব চোখের জলে আত্মসমর্পণ করেছিল ওই রিহার্সালে - 'Mike'এর হাতে। সরব হবার যথেষ্ট উপকরণ থাকা সত্ত্বেও দুর্বল ব্যবহারিক প্রয়োগে শ্বাসরোধে অপমৃত্যু ঘটলো তার। যদিও আবারও বলব, কাউকে দোষারোপ করাটা কিন্তু কোন কাজের কথা নয়। Mr Mike-এর চেষ্টায় কোন খামতি ছিল না। কমিউনিকেশন গ্যাপ বা ভাষাগত সমস্যা হয়তো এক্ষেত্রে সাময়িক অন্তরায় হয়ে উঠেছিল।
যন্ত্রগুলো কঠিন দুঃখে নীরব চোখের জলে আত্মসমর্পণ করেছিল ওই রিহার্সালে - 'Mike'এর হাতে। সরব হবার যথেষ্ট উপকরণ থাকা সত্ত্বেও দুর্বল ব্যবহারিক প্রয়োগে শ্বাসরোধে অপমৃত্যু ঘটলো তার। যদিও আবারও বলব, কাউকে দোষারোপ করাটা কিন্তু কোন কাজের কথা নয়। Mr Mike-এর চেষ্টায় কোন খামতি ছিল না। কমিউনিকেশন গ্যাপ বা ভাষাগত সমস্যা হয়তো এক্ষেত্রে সাময়িক অন্তরায় হয়ে উঠেছিল।
প্রায় সন্ধে ৭টা নাগাদ এসে পৌঁছলাম নিউ জার্সি-র অন্য প্রান্তে একটি বিখ্যাত beach-এ। নামটিও ভারী মিষ্টি - Cape May । Sandy Hook থেকে Cape May - প্রায় ১৩০ মাইল Coastline বরাবর বিস্তৃত নিউ জার্সি'র এই Beach সমাহার। কিছু Beach তো জগৎবিখ্যাত অপরূপ সুন্দর সফেদ বালুকণার জন্য - যাকে White Sand Beach বললেই চটজলদি বোঝা যায়। Cape May-তে নামলাম গাড়ি থেকে। সাদা বালির ওপর বিদায়ী সূর্যের আলো প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে সম্মোহিত করতে বাধ্য। পার্কিং জোন-এর ঠিক উল্টো দিকেই সীমাহীন নীল আর নীল। আকাশ ও সমুদ্রের মিলন-সঙ্গমে লালাভ সূর্য সবে সমুদ্র ছুঁয়ে ঝুলে রয়েছে - আমাদের দর্শনের পরেই হয়তো অসীম জলরাশির কোলে নিদ্রা যাবে। কতকটা মোহগ্রস্তের মত আমরা পা রাখলাম সমুদ্র-সৈকত বরাবর চলনপথে। আমাদের বাঁহাতে রইলো সমুদ্র। অসামান্য সৌন্দর্য্যায়নের বুক চিরে আমরা এগোতে লাগলাম, কমতে থাকলো আমাদের মনের মধ্যে জমাট বাঁধা দুশ্চিন্তার কালো মেঘ। নানা জাতের বাহারি অর্কিড ও মরসুমী ফুলের চালচিত্রে দুচোখে আমাদের ঘোর লেগেছে।
ভারতীয় সৈকত-শহরগুলোতে যেমন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হোটেল বা হলিডে হোমের প্রাচুর্য দেখি, এখানে তার লেশমাত্র চোখে পড়লো না।সূর্যাস্তের আলো ক্রমশঃ মায়াবী রূপ ধারণ করে শেষবেলাকার স্নিগ্ধ পরশ বুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে এই শহরের সারা শরীরে। পরম স্ফূর্তিতে মার্কিন সুন্দরীরা ক্লান্তি দূর করছে সমুদ্রস্নানে। তাদের নির্বাচিত স্বামীকুল সমুদ্রকূলে দাঁড়িয়ে, কেউ বা ইজিচেয়ারে বসে সজাগ দৃষ্টি রাখছে - যাতে হঠাৎ ঢেউয়ে সংসার ভেসে না যায়। সৌন্দর্যের খতিয়ান মনে না রেখে ক্যামেরাবন্দি করবার উদ্দেশে আমাদের প্রত্যেকেই প্রায় নিজের নিজের ক্যামেরা বের করে ফেললাম। অপেক্ষাকৃত তরুণ বয়েসের ক্যামেরার ফোকাস রইলো সমুদ্রমুখো - বাকিরা অর্কিড ও ক্যাকটাসের ছবি তুলতে ব্যস্ত। তাদের হাবেভাবে চৌকস ফোটোগ্রাফারের ছাপ। সম্ভবতঃ বাড়ি ফিরেই ফেসবুক-এ আপলোড হবে।
পার্থবাবুর খিদেটা হঠাৎ চাগাড় দিয়ে উঠলো, সঙ্গে আমারও। তাই আজকের মত এটুকুই ........
পরের পর্বে খাবারের মেনু ও আনুষঙ্গিক - একসাথে বসে স্বাদ গ্রহণ করা যাবে পাঠকের সাথে ।

পার্থবাবুর খিদেটা হঠাৎ চাগাড় দিয়ে উঠলো, সঙ্গে আমারও। তাই আজকের মত এটুকুই ........
পরের পর্বে খাবারের মেনু ও আনুষঙ্গিক - একসাথে বসে স্বাদ গ্রহণ করা যাবে পাঠকের সাথে ।
সাগরপারের ডায়েরি/তপন বসু/পৃষ্ঠা-১২/চলবে ..........
'সাগরপারের ডায়েরি'র পর্ব-১৩ পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
'সাগরপারের ডায়েরি'র ১ম পর্ব পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
©tapan basu. all rights reserved.
Picture Courtesy > (1)Exploring your mind / (2)Wikimedia Commons
Comments
Post a Comment