একটু ভেবে দেখুন-পর্ব ১১ (ডাক্তার) | Ektu Bhebe Dekhun Ep#11 (Doctor)
একটু ভেবে দেখুন
পর্ব ১১
আজকের পর্ব - ডাক্তার
"কত না দেশ-বিদেশ ঘুরে,
অনেক যুদ্ধ জয় করে,
তবেই না হয়েছো তুমি 'ডাক্তার' -
আমাদের বাণিজ্যে মা লক্ষ্মী এলেও,
স্বীকৃতিতে ধন্য হলেও,
পাই কি ? কাছের-দূরের নির্বিশেষে -
আকুল কোনও ডাক তার ?
এমনি জীবিকা বেছে নিয়েছ, 'বন্ধু'
দিন-রাতের সেবাধর্মে,
সময়-ঘুমে ফাঁকি -
এ জীবিকা জীবন চেনায়, তাই
আর পাঁচটা কর্ম জীবন -
চেনা রাস্তায় স্বজন-সুজন,
এরা সকল আর শিক্ষামহল -
রইল তারা বাকি ;
এঁদের জন্যে শ্রদ্ধা রেখে
তোমার প্রতি অসীম গুরুত্বে -
তোমাকেই মাথায় তুলে রাখি"।
প্রিয় ডাক্তার,
তুমি ও তোমার সঙ্গে দিবারাত্র লড়াইয়ে সঙ্গী সমস্ত সহযোগীদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এই লেখার গোড়াতেই। আজ এই পৃথিবী ছেয়ে গেছে রোগ আর রোগীতে। প্রতিনিয়ত তোমরা তোমাদের প্রজ্ঞা-শক্তি আর নতুন ওষুধে মারণ-রোগকে জয় করছ, আবার প্রায়শঃই হার মানছো প্রাণঘাতী কোন জীবাণুর আকস্মিক আত্মপ্রকাশে। তবু, তবু ...... তোমাদের যুদ্ধে কোন বিশ্রাম নেই। তোমাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলি না আমরা। তোমরা কেউ আমাদের একটু ভাল চিকিৎসা করলে বা আমাদের পরিবারের কেউ তোমার চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলে, আমরা তোমাকে ঈশ্বরজ্ঞান করি। এর মূল কারণ হল, ডাক্তারি শাস্ত্রটা ডাক্তারেরই কুক্ষিগত। তোমাদের কাজের সমালোচনা করবার অধিকার বা যোগ্যতা কোনোটাই আমরা পাই নি। অথচ, আমাদের চাকরির বাজারে দেখো? মাথার ওপর যিনিই থাকুন না কেন, তাঁর তিরস্কারের মাল্যদান হয়নি, এমন চাকুরিজীবি দুর্লভ। কোন ক্ষেত্রে এতো ঘন ঘন তোমাদের মতো কাজের মূল্যায়ন হয়, বলো? এর প্রধান কারণ তো জানো, তোমরা নিজেরাই নিজেদের কর্মে, পরিচয়ে এক এবং অদ্বিতীয়। তোমাদের না আছে কাজের অভাব, না অসম্মানিত হবার ভয়। হ্যাঁ, ইদানীং মানুষ একটু অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছে বিভিন্ন কিছু কারণে - সে জন্যেই আমার এই খোলা চিঠি তোমাদের উদ্দেশ্যে।
সত্যি বলো তো? তোমাদের মাথার ওপর একজন আপাদমস্তক ব্যবসায়ীয়ের পরিচালক হিসেবে থাকার কি কোন প্রয়োজন আছে? শুধুমাত্র তার অর্থবলই কি এর কারণ? যে ব্যবসায়ী-পরিচালকমণ্ডলী মানুষের জীবনের বিনিময়ে নিজেদের ব্যবসার খুঁটিকে পাখির চোখ হিসেবে দেখে? কায়েম করে নেয় নিজেদের কথা বলার অধিকার, তা যতই সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যাক, তবুও। স্বার্থপরতার ওই নৈরাজ্যে আবার হাতে হাত মেলায় প্রভাবশালীরা - কিসের ভরসায়? তোমরাই তো এদের একমাত্র হাতিয়ার! তবে? তবে বেসরকারি হাসপাতালের সাত-মহলা তকমার আড়ালে এদের এতো আস্ফালন কিসের? এই ব্যাভিচার কোন ভিত্তিতে? যার প্রতিফল পেতে হয় সাধারণ মানুষকে? ভোগ করতে হয় নরক-যন্ত্রণা ?
লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করবার পরেও যদি নিজের রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরাতে পারি, আমরা নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি । না কোন হিসেবের বালাই, না রোগীর তরফে করা প্রশ্নের কোন উত্তর - নির্লজ্জ উদাসীনতা বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। আমরা ধন্য হয়ে পড়ি সেখানে একটি বেড পেয়ে। যেন যুধিষ্ঠিরের সঙ্গে মহাপ্রস্থানে সঙ্গী হয়েছি। অপ্রয়োজনীয় ল্যাব-টেস্ট, অনাবশ্যক টয়লেট-সামগ্রী - এ সমস্ত লোক-দেখানো কায়দা-কানুন কি আদৌ রোগীকে সুস্থ করে তোলার কারণে? রোগী ও তার পরিবার যদি নিঃশেষ হয়ে গেল চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে, তা হলে তার সুস্থ হয়ে লাভ কি ? তাকে কি আদতে ভালো হওয়া বলে ?
হ্যাঁ, তোমদের কাছে উত্তর আছে - 'যাও না সরকারি হাসপাতালে। পাঁচ-তারা সুবিধে চাও, দেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা চাও - অথচ টাকা দেবার বেলায় এতো কথা কিসের' ? তা তো বলবেই। আমাদেরই টাকায় তোমার গড়ে তোলা ইমারতে তোমার পুত্র-কন্যা-পরিবারের তো সুচিকিৎসার অভাব হয় না - সে ব্যাপারে তোমরা নিশ্চিত আছো। সেক্ষেত্রে তাদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার কোন প্রশ্নই আসে না। তাই আমাদের চোখের জলে তোমাদের জমি ভেজে না, বরঞ্চ সে জমি আরো শক্ত হয়, কঠিন মনস্তত্বের প্যাকেজে - তোমরা হয়ে ওঠো অপরিহার্য।

আমার মা'কে নিয়ে কোন এক নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম - মায়ের হঠাৎ পড়ে গিয়ে নাক দিয়ে রক্তক্ষরণের কারণে। সেখানে পৌঁছোবার পর পাক্কা পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করতে লেগেছিল - শুধু এমার্জেন্সির ডাক্তারের সান্নিধ্যে আসতে, প্রাথমিক পরিষেবা পেতে। সেটাও আমার এক পরিচিত বন্ধু ছিলেন বলে। নইলে মা'কে সেই হাসপাতাল এমার্জেন্সির দরজা থেকেই বিদায় জানিয়েছিল। আমার নিজের জীবনে চাক্ষুষ করা এক দুঃখজনক অভিজ্ঞতা। বন্ড দিয়ে মা'কে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিলাম, কারণ ডাক্তার প্রমাণ করবেনই যে, পড়ে যাওয়ার এক বিশাল কারণ তাঁরা ধরে ফেলেছেন। তাঁরা আমার মায়ের পেসমেকার বসাবেন, এখুনি - না হলে যখন তখন তিনি আবার পড়ে যাবেন - হার্ট নাকি যে কোন সময়ে ব্লক হয়ে যেতে পারে। নাকের হাড়ে চিড় ধরেছিল, আধঘন্টার অপারেশনে সে আর নাকাল করে নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত ENT Specialist আর তদারকির কোন প্রয়োজনই অনুভব করলেন না। তবু, মা'কে ছাড়বার নাম নেই। আমার সামান্য অভিজ্ঞতার সূত্রে বুঝেছিলাম, মানুষের দুর্বল মুহূর্তকে তোমরা কেমন করে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ে রূপান্তরিত করছ! এ কি প্রকৃতই তোমরা মন থেকে চাও? আমার তো বিশ্বাস হয় না। কারণ, তোমাদের মধ্যেই তো সেই মহানুভব ডাক্তাররা রয়েছেন, যিনি বা যাঁরা এই মহামারির আমলে বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসা করে নিজেরাই এই মারণব্যাধির কবলে জীবন বিসর্জন দিচ্ছেন। তোমাদের প্রণাম না করে কোথায় যাই বলো তো?
একটু ভেবে দেখো তোমরা। স্বাস্থ্যরক্ষা ক্ষেত্রে এমন প্রহসন কি মানায় তোমাদের? এসো না, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটু অন্য কিছু ভাবি! ডাক্তারের হাতেই তৈরী হোক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতাল, বিশেষজ্ঞের হাতে গ্রাম-শহর, শিক্ষিতের হাতে থাকুক দেশ-চালনার ভার!
লোকে অন্ততঃ অন্ধকারে আলো দেখুক তোমাদের প্রতি বিশ্বাস ও ভালবাসা নিয়ে। সেদিন দেশের সাধারণ মানুষই সবার সামনে দাঁড়িয়ে বলবে, 'তোমরাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার একমাত্র ইন্স্যুরেন্স।
রইল আমার মনের ইচ্ছে। কোন ব্যক্তিগত বিষোদ্গার নয়, কোন অকারণ খেদ নিয়ে নয়, তোমাদের প্রতি পরম শ্রদ্ধা নিয়েই আমার এই প্রতিবেদন। অভিমান যে একেবারে নেই, তেমন সার্টিফিকেট যদিও দিতে পারি না। বিপক্ষে রইল শুধু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী শ্রেণী, যাদের হাতে দেশের সর্বময় কর্তা থেকে গরিব চাষী - সকলেই কোন-না-কোনভাবে খেলনা পুতুল। সামনে ঝোলানো খুঁড়োর কল - অধরা মাধুরীর অদৃশ্য মরীচিকা। যেদিন সত্যি ধরতে যাবেন, উন্মোচিত হবে স্বার্থলোভী ব্যবসায়ীর আসল রূপ।
সেদিন ভয় পাবেন না তো? ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের গল্প মনে আছে নিশ্চই!
আমার এই ছোট্ট প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত দু'দিনে ঘটে যাওয়া ডিসান হসপিটালের সত্য-কাহিনিতে একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন দয়া করে। আর হ্যাঁ, শ্যামনগরের সেই ডাক্তারের কথাও ভুলবেন না, যিনি পরের সেবায় জীবন দিলেন আর তাঁর চিকিৎসাতেই মেডিক্যাল বিল হলো সাড়ে আঠেরো লাখ, সেই বেসরকারি হাসপাতালে। হয় রে নিয়তি! ব্যবসায়ী যে কাউকে ছাড়ে না। এ সব পড়া হয়ে গেলে ......... তারপর আমি অনুরোধ করব -----
"কত না দেশ-বিদেশ ঘুরে,

তবেই না হয়েছো তুমি 'ডাক্তার' -
আমাদের বাণিজ্যে মা লক্ষ্মী এলেও,
স্বীকৃতিতে ধন্য হলেও,
পাই কি ? কাছের-দূরের নির্বিশেষে -
আকুল কোনও ডাক তার ?
এমনি জীবিকা বেছে নিয়েছ, 'বন্ধু'
দিন-রাতের সেবাধর্মে,
সময়-ঘুমে ফাঁকি -
এ জীবিকা জীবন চেনায়, তাই
আর পাঁচটা কর্ম জীবন -
চেনা রাস্তায় স্বজন-সুজন,
এরা সকল আর শিক্ষামহল -
রইল তারা বাকি ;
এঁদের জন্যে শ্রদ্ধা রেখে
তোমার প্রতি অসীম গুরুত্বে -
তোমাকেই মাথায় তুলে রাখি"।
প্রিয় ডাক্তার,
সত্যি বলো তো? তোমাদের মাথার ওপর একজন আপাদমস্তক ব্যবসায়ীয়ের পরিচালক হিসেবে থাকার কি কোন প্রয়োজন আছে? শুধুমাত্র তার অর্থবলই কি এর কারণ? যে ব্যবসায়ী-পরিচালকমণ্ডলী মানুষের জীবনের বিনিময়ে নিজেদের ব্যবসার খুঁটিকে পাখির চোখ হিসেবে দেখে? কায়েম করে নেয় নিজেদের কথা বলার অধিকার, তা যতই সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যাক, তবুও। স্বার্থপরতার ওই নৈরাজ্যে আবার হাতে হাত মেলায় প্রভাবশালীরা - কিসের ভরসায়? তোমরাই তো এদের একমাত্র হাতিয়ার! তবে? তবে বেসরকারি হাসপাতালের সাত-মহলা তকমার আড়ালে এদের এতো আস্ফালন কিসের? এই ব্যাভিচার কোন ভিত্তিতে? যার প্রতিফল পেতে হয় সাধারণ মানুষকে? ভোগ করতে হয় নরক-যন্ত্রণা ?
লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করবার পরেও যদি নিজের রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরাতে পারি, আমরা নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি । না কোন হিসেবের বালাই, না রোগীর তরফে করা প্রশ্নের কোন উত্তর - নির্লজ্জ উদাসীনতা বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। আমরা ধন্য হয়ে পড়ি সেখানে একটি বেড পেয়ে। যেন যুধিষ্ঠিরের সঙ্গে মহাপ্রস্থানে সঙ্গী হয়েছি। অপ্রয়োজনীয় ল্যাব-টেস্ট, অনাবশ্যক টয়লেট-সামগ্রী - এ সমস্ত লোক-দেখানো কায়দা-কানুন কি আদৌ রোগীকে সুস্থ করে তোলার কারণে? রোগী ও তার পরিবার যদি নিঃশেষ হয়ে গেল চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে, তা হলে তার সুস্থ হয়ে লাভ কি ? তাকে কি আদতে ভালো হওয়া বলে ?
হ্যাঁ, তোমদের কাছে উত্তর আছে - 'যাও না সরকারি হাসপাতালে। পাঁচ-তারা সুবিধে চাও, দেশের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসা চাও - অথচ টাকা দেবার বেলায় এতো কথা কিসের' ? তা তো বলবেই। আমাদেরই টাকায় তোমার গড়ে তোলা ইমারতে তোমার পুত্র-কন্যা-পরিবারের তো সুচিকিৎসার অভাব হয় না - সে ব্যাপারে তোমরা নিশ্চিত আছো। সেক্ষেত্রে তাদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার কোন প্রশ্নই আসে না। তাই আমাদের চোখের জলে তোমাদের জমি ভেজে না, বরঞ্চ সে জমি আরো শক্ত হয়, কঠিন মনস্তত্বের প্যাকেজে - তোমরা হয়ে ওঠো অপরিহার্য।

আচ্ছা, আমার একটা প্রশ্নের সত্যি উত্তর দেবে? তোমরা কি পারো না, কয়েকজন ডাক্তার মিলে তোমাদের নিজেদের পরিচালনায় হাসপাতাল অথবা সেবা-প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে? তাহলে তো সেখানে ব্যবসার কোন টার্গেট থাকে না, থাকে না তোমাদেরও কখনো কখনো অপছন্দের ঘেরাটোপ! মানুষকেও অহেতুক ভুগতে হয় না অবিশ্বাসে!
আমার মা'কে নিয়ে কোন এক নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলাম - মায়ের হঠাৎ পড়ে গিয়ে নাক দিয়ে রক্তক্ষরণের কারণে। সেখানে পৌঁছোবার পর পাক্কা পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করতে লেগেছিল - শুধু এমার্জেন্সির ডাক্তারের সান্নিধ্যে আসতে, প্রাথমিক পরিষেবা পেতে। সেটাও আমার এক পরিচিত বন্ধু ছিলেন বলে। নইলে মা'কে সেই হাসপাতাল এমার্জেন্সির দরজা থেকেই বিদায় জানিয়েছিল। আমার নিজের জীবনে চাক্ষুষ করা এক দুঃখজনক অভিজ্ঞতা। বন্ড দিয়ে মা'কে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিলাম, কারণ ডাক্তার প্রমাণ করবেনই যে, পড়ে যাওয়ার এক বিশাল কারণ তাঁরা ধরে ফেলেছেন। তাঁরা আমার মায়ের পেসমেকার বসাবেন, এখুনি - না হলে যখন তখন তিনি আবার পড়ে যাবেন - হার্ট নাকি যে কোন সময়ে ব্লক হয়ে যেতে পারে। নাকের হাড়ে চিড় ধরেছিল, আধঘন্টার অপারেশনে সে আর নাকাল করে নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত ENT Specialist আর তদারকির কোন প্রয়োজনই অনুভব করলেন না। তবু, মা'কে ছাড়বার নাম নেই। আমার সামান্য অভিজ্ঞতার সূত্রে বুঝেছিলাম, মানুষের দুর্বল মুহূর্তকে তোমরা কেমন করে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ে রূপান্তরিত করছ! এ কি প্রকৃতই তোমরা মন থেকে চাও? আমার তো বিশ্বাস হয় না। কারণ, তোমাদের মধ্যেই তো সেই মহানুভব ডাক্তাররা রয়েছেন, যিনি বা যাঁরা এই মহামারির আমলে বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসা করে নিজেরাই এই মারণব্যাধির কবলে জীবন বিসর্জন দিচ্ছেন। তোমাদের প্রণাম না করে কোথায় যাই বলো তো?
একটু ভেবে দেখো তোমরা। স্বাস্থ্যরক্ষা ক্ষেত্রে এমন প্রহসন কি মানায় তোমাদের? এসো না, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটু অন্য কিছু ভাবি! ডাক্তারের হাতেই তৈরী হোক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতাল, বিশেষজ্ঞের হাতে গ্রাম-শহর, শিক্ষিতের হাতে থাকুক দেশ-চালনার ভার!
লোকে অন্ততঃ অন্ধকারে আলো দেখুক তোমাদের প্রতি বিশ্বাস ও ভালবাসা নিয়ে। সেদিন দেশের সাধারণ মানুষই সবার সামনে দাঁড়িয়ে বলবে, 'তোমরাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার একমাত্র ইন্স্যুরেন্স।
রইল আমার মনের ইচ্ছে। কোন ব্যক্তিগত বিষোদ্গার নয়, কোন অকারণ খেদ নিয়ে নয়, তোমাদের প্রতি পরম শ্রদ্ধা নিয়েই আমার এই প্রতিবেদন। অভিমান যে একেবারে নেই, তেমন সার্টিফিকেট যদিও দিতে পারি না। বিপক্ষে রইল শুধু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী শ্রেণী, যাদের হাতে দেশের সর্বময় কর্তা থেকে গরিব চাষী - সকলেই কোন-না-কোনভাবে খেলনা পুতুল। সামনে ঝোলানো খুঁড়োর কল - অধরা মাধুরীর অদৃশ্য মরীচিকা। যেদিন সত্যি ধরতে যাবেন, উন্মোচিত হবে স্বার্থলোভী ব্যবসায়ীর আসল রূপ।
সেদিন ভয় পাবেন না তো? ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের গল্প মনে আছে নিশ্চই!
আমার এই ছোট্ট প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত দু'দিনে ঘটে যাওয়া ডিসান হসপিটালের সত্য-কাহিনিতে একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন দয়া করে। আর হ্যাঁ, শ্যামনগরের সেই ডাক্তারের কথাও ভুলবেন না, যিনি পরের সেবায় জীবন দিলেন আর তাঁর চিকিৎসাতেই মেডিক্যাল বিল হলো সাড়ে আঠেরো লাখ, সেই বেসরকারি হাসপাতালে। হয় রে নিয়তি! ব্যবসায়ী যে কাউকে ছাড়ে না। এ সব পড়া হয়ে গেলে ......... তারপর আমি অনুরোধ করব -----
একটু ভেবে দেখবেন !!!
"একটু ভেবে দেখুন"-এর বাকি পর্ব পড়তে চাইলে নিচে দেওয়া লিংক-এ ক্লিক করুন ।
image courtesy : (1)pixabay (2)123RF (3)pinterest
Comments
Post a Comment