Posts

তপনের ডায়েরি ৭ / ৩১ আগস্ট ২০২১

তপনের ডায়েরি ৭ ৩১ অগাস্ট ২০২১ দুপুর ৩টে ........ এই জাস্ট খেয়ে উঠলাম। ডাক্তারের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা হলো দেখলাম বুবলুর সঙ্গে। আমার এই হঠাৎ চিকিৎসা ওকে বেশ বড় করে দিচ্ছে দেখলাম। আমিও খুব উপভোগ করছি ওর এই নিজস্বতাকে।  একটু আগে মা ফোন করল। রুপা এসে নিয়ে যাচ্ছে মা'কে জয়পুর। সুন্দর বুঝিয়েছে মা'কে।  আজ দিনটা সুন্দর ছুটি পেয়েছি। এখন বুবলু অফিস গেছে। স্বপ্না একটু শুতে গেলো, আমি তাই একটু লেখা নিয়ে বসেছি।  আজ সকালের একটা ঘটনার কথা বলে রাখি। হাত ঘড়িটা চেয়ে দেখলাম, রাত ৪টে বাজে। একটু বাথরুম থেকে এসেই খুব ভাবতে ইচ্ছে করলো, কি করি আমার এই এতো গানবাজনার বই-কাগজপএ নিয়ে। একটা দারুন চিন্তা মাথায় এলো। সেও স্বপ্ন নিয়েই চোখে ঘুম এলো আবার। একটু ভালো করে দেখি জানাচ্ছি।

তপনের ডায়েরি ৬ / ৩০ আগস্ট ২০২১

৩০ আগস্ট ২০২১ তপনের ডায়েরি-৬ /  মা'কে নিয়ে চিন্তায় আছি।  আমার হঠাৎ একটু শারীরিক অসুস্থতা মা'র মাথায় সেভাবে চাপানো হয় নি। তবু মা তো ? কিছু বোঝে নিজে থেকে, আর কিছুটা না বুঝিয়েই। সুতরাং দেখলাম, রুপার বাড়ি জয়পুর (সেই রাজস্থান) যেতে খুব একটা না করল না।   

স্টেরয়েড ছোট গল্প রচনা : তপন বসু

স্টেরয়েড ছোট গল্প  রচনা : তপন বসু  স্টেরয়েড, স্টেরয়েড  ........  লাগবে না কি বাবু ? - হাঁক পাড়ে ফেরিওয়ালা।  উৎসুক পল্লীবাসীর উঁকিঝুঁকি। প্রশ্ন ভেসে আসে - 'কি বিক্রি করছ ? স্টেরয়েড ? মানে ইঞ্জেকশন ? ওষুধ'? হ্যাঁ গো বাবুমশায়েরা। ইঁদুর মারার, আরশোলা মারার ওষুধ যখন বিক্রি করতুম তখন তো তোমরা, ছেলে-ছোকরারা আমায় বলতে, 'মানুষ মারার ওষুধ আছে '?  'এই তো এনেছি, এবার নাও দেখি - এতে মানুষ যেমন মরবে, আবার বাঁচবেও - হ্যাঁ গো সত্যি বলছি গো' - ফেরিওয়ালার শেষের কথায় ঘাম ঝরা বেদনা ফুটে বেরিয়ে আসে।  ঝুম্পা বৌদি আকাশছোঁয়া ফ্ল্যাট-বাড়ির উপরতলার বাসিন্দা।  পাঁচ তলার বারান্দা থেকে এতক্ষণ টপ ভিউ নিচ্ছিল। বেশ মজা পেয়ে রসিকতার আমেজে বললে, 'তো এটা কিভাবে নিতে হবে? কতক্ষণ লাগবে শুনি মরতে' ?  ফেরিওয়ালা খুব সিরিয়াস - 'দেখছেন না আমার এই বাক্স? এতে বরফ দিয়ে মোড়া আছে - যেমন ইনসুলিন নাও গো তোমরা, শুধু হাতে ফুটিয়ে দিলেই চলবে। যদি অন্যকে মারতে চাও, ঠিক বলতে পারব না ; আর যদি নিজে মরতে চাও, তাহলে বেশিক্ষণ লাগবে না'। ঝুম্পা বৌদির ঠিক উল্টোদিকে মধ্যবয়স্কা তপশ্রীদি, স্কুল টিচার - 'ছু

টয়লেট (ছোট গল্প) রচয়িতা : তপন বসু

Image
  টয়লেট (ছোট গল্প) রচয়িতা : তপন বসু ‘খোকা ! একটু আয় না রে’ ! পাশের ঘর থেকে বাবার ডাক। ‘বড্ড জোর পেয়ে গেছে, একটু টয়লেটে নিয়ে যাবি’ ? বাবা আবার বলেন, এবার আর একটু গলা উঁচিয়ে। ‘আঃ ! দাঁড়াও না ! একটু চেপে রাখো ! হাতের কাজটা সেরেই যাচ্ছি' - ল্যাপটপে মগ্ন ছেলে বিরক্তি প্রকাশ করে, কর্তব্যকে অস্বীকার না করে।  অফিসে ফাইল পাঠিয়ে হাতের কাজ সেরে খোকা পাশের ঘরে যায়, বাবার কাছে - 'যাবে এখন' ? বাবা বলেন, ‘তুই আর কি করবি ? এতো কাজের চাপ ! ডাকলেই তক্ষুনি কি আর আসা যায় ? চলে গেছে রে। আবার এলে বলব'। - 'কি করি বল ? আমি যে একলা হাঁটতে পারি না রে তুই ছাড়া' - বাবা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। বাবা-মা দুজনেই আশি পার, একজন অষ্টাশি, মা চুরাশি। এমনিতে সুস্থ, কিন্তু কাউকে না ধরে একলা হাঁটতে পারে না। আসলে পায়ের ব্যালেন্সটা গেছে। আবার ডাক। খোকা নিজেই তখন টয়লেটে, সবে সিগারেটটা ধরিয়েছে - 'উফ ! এবার বেরোই কি করে'? বাবা উৎকণ্ঠায় মা'কে জিজ্ঞেস করেন, 'হ্যাঁ গো, খোকা কি পাশের ঘরে নেই' ? মা বললেন, 'কি জানি ? এই তো ফোনে কথা বলছিল শুনলাম'।  - 'খোকা, ও খোকা' ! বাবার ডাক বেশ কা

তপনের ডায়েরি ৫ / ৫ আগস্ট ২০২১

তপনের ডায়েরি ৫ / ৫ আগস্ট ২০২১ হ্যাঁ, গতকাল সকালে ডাক্তার নিজেই ফোন করলেন বুবলুকে। বললেন আমার ব্রেন-এ একটা খুব ছোট্ট সাইজের মাংসপিন্ড গজিয়েছে, যেটিকে আমাদের খেয়ে ফেলা উদ্দেশ্য। কিন্তু আমি তো জানি যে আমার মাথা ঠিক কি পরিমাণ ঝামেলা অকারণে অন্যের মাথায় চাপিয়ে দিতে পারে ! তাই প্রসঙ্গত, ওই পিন্ড বা টিউমার এমন একটি স্থানে জায়গা নিয়েছে, তাকে সরিয়ে ফেলা মুশকিল। সুতরাং ঠিক হয়েছে এখন, তাকে দেখতে হবে।  আমি এই ৯ তারিখে ভর্তি হবো হিন্দুজা হাসপাতালে - ডাক্তার মিশ্র মানে ডঃ বসন্ত কুমার মিশ্র - নিজেই অপারেট করবেন। উনি ছাড়া ভারতবর্ষে খুব কম সার্জন রয়েছেন, যিনি নাকি এতো বড় অপারেশন-এ হাত দিতে পারেন।  এই সময়ের মধ্যে আর অন্য বলবার মতো কিছু ঘটে নি। চেনা-জানা সকলেরই ফোন আমাকে ঘিরে। তাদের শুধু বলছি, এমন এক টিউমার আমার মাথায় হয়েছে, সেটির খোঁজ চলছে চরম দ্রুততায় ও বিশেষ দক্ষতায়। পেলে জানানো হবে।  আমার মাকে নিয়ে খুবই চিন্তা। একা হয়ে পড়েছেন বড়। আমাকে হসপিটালে ভর্তি হতে হচ্ছে, এটা মা'য়ের একেবারে ভাবনা-চিন্তার উর্দ্ধে।  চলুক না   .......... 

তপনের ডায়েরি ৪ / 30-July-2021

তপনের ডায়েরি  ৪। ৩০শে জুলাই ২০২১ গতকাল হঠাৎ করে বোম্বে আসতে হলো। কারণটা বলছি - তার আগে বলি, বুবলু বারেবারেই শিরোর কথা বলতো। বলত, "বাবা, তুমি এলে শিরো-কে নিয়েই তোমার সময় কেটে যাবে। এতো মিষ্টি তোমায় কি বলব'। সত্যিই তাই। শিরো এমন একটা পুষ্যি, যে তার অনবদ্য আকার-প্রকারেই আপন করে নেবে আপনাকে।যাই হোক, খুব স্বাভাবিকভাবেই আজ সকাল থেকে ওর জন্যে মনটা কেমন যেন বিহ্বল হয়ে রইল। এর মধ্যে দেখি আমার চোখের একটু সমস্যা। কি রকম ? না, একটু যেন ঝাপসা দেখছি। সবে এসেছি বেঙ্গালুরু। এখনই এই বিষয় নিয়ে বুবলুকে বিব্রত করতে ইচ্ছে করছে না, তবুও বলতেই হলো। কারণ, এর উৎস কি বা কোথায়, তা জানাটা খুব জরুরি। গেলাম NIMHANS-এ - ন্যাশনাল ইন্সটিট্যুটে অফ মেন্টাল হেল্থ & নিউরোসায়েন্স। সেখানে তো এই পান্ডেমিক অবস্থাতেও তিল ধারণের জায়গা নেই।দেবতার মন্দিরে প্রবেশ করবার মতো করে লাইন দিয়ে পৌঁছলাম ডাক্তারের দরবারে। দেখলেন তাঁরা, বেশ মনোযোগ সহকারেই, তবে উত্তর পেতে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।  এদিকে, বুবলু একটুও অপেক্ষাতে নারাজ। বাবা দেখতে না পেলে কিছুতেই যে হবে না। আমার দৃষ্টির ওপরে ওর যে এতটা শুভদৃষ্টি, ভেবেই কেমন পুলক অনু

তপনের ডায়েরি ৩ | 28 July 2021

তপনের ডায়েরি ৩ | 28 July 2021 ভাবছিলাম, আমার একটা ভুল ধারণার কথা। প্লেনে করে বেঙ্গালুরু আসতে আসতে ভাবছিলাম ওখানে পৌঁছে সময় কাটাবো কি করে ? কিন্তু এ আমার চিরকালের সৌভাগ্য, নিজের জায়গায় পৌঁছোবার পর ওই দুশ্চিতাটা আর মাথায় প্রশ্রয় পায় না। এবারেও কোন অন্যথা হোল না। বুবলুর ফ্ল্যাট HSR-এ, সুন্দর লোক্যালিটি।  ওর ফ্ল্যাটে যখন পৌঁছলাম তখন প্রায় অন্ধকার, তবু যেটুকু দেখলাম, তাতেই মন ভরে গেল। আর বুবলু একা থাকে বলে, ফ্ল্যাটে বাড়তি কিছু নেই যেটা অতিরিক্ত মনে হতে পারে। স্বপ্না  নিয়ে গেল মৈনাকদের বাড়ি ওই রাত্রেই। আলাপ হলো মৈনাকের মা কোয়েলির সঙ্গে; আর নিমেষে একাত্ম হলাম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ওদের পোষ্য 'শিরো'কে কাছে পেয়ে। Shih-tzu প্রজাতির এই পোষ্যটি যতটা সুন্দর, ততটা মিষ্টি। তার চিৎকারও যে এমন মধুর হতে পারে, আমার তেমন কোন ধারণাই ছিল না। অনেকটা রাত হলো বুবলুর ফ্ল্যাটে ফিরতে। অল্প বৃষ্টি হচ্ছে, এখন বর্ষাকাল। শির্শিরিনি হওয়ার মধ্যে বাড়ি এসে শুতে বেশি রাত আর করি নি।